মাদকবিরোধী অভিযানেও থেমে নেই ইয়াবা ব্যবসা

চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ব্যবসায়ীরা এখন ঘরছাড়া। তাই বহুল প্রচলিত ইয়াবা ট্যাবলেট যেন পরিণত হয়েছে দুর্লভ বস্তুতে। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, থেমে নেই এ ব্যবসা, গোপন মোবাইল নেটওয়ার্কে চলছে লেনদেন। দাম বেশ চড়া, দুই থেকে তিন গুণ বেশিতে কিনতে হচ্ছে এ ট্যাবলেট। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে যারা ইয়াবায় আসক্ত, তারা ছুটছে দিগি-দিক। তাদের অনেকে ইয়াবা না পেয়ে ঝুঁকে পড়ছে মদ্যপানে। ফলে রাজধানীর বারগুলোয় এই রমজান মাসেও হচ্ছে জমজমাট বিকিকিনি।

জানা গেছে, অভিযান শুরুর কয়েকদিন আগেও রাজধানীর অলিগলিতে মুড়ি-মুড়কির মতো বিক্রি হতো ইয়াবা। ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘বিশেষ সদস্যদের ম্যানেজ করেই’ দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের মাদক নেটওয়ার্ক অব্যাহত রেখেছিল। ‘যারা শেল্টার দিত’, তারাই এখন পিছু লেগেছে মাদক ব্যবসায়ীদের।

তাই মাদকের ডেরা হিসেবে পরিচিত চকবাজারের ইসলামবাগ, লালবাগের শহীদনগর, বংশালের আগামাসী লেন, কমলাপুরের টিকাটুলি বস্তি, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, যাত্রাবাড়ীর ধলপুর বস্তি, শাহআলীর ঝিলপাড় বস্তিসহ রাজধানীর সব স্পটের ব্যবসায়ীরাই আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছে। এতে ইয়াবার আকাল দেখা দিয়েছে মাদক ওয়ার্ল্ডে। তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গোপনে মোবাইল ফোনে নিজেদের নেটওয়ার্ক সক্রিয় রেখেছে। ২০০ টাকার ইয়াবার দাম রাখছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।

ক্ষেত্রবিশেষে চাইছে হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবায় আসক্তরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। নেশার টানে তারা ছুটছে এই ডেরা থেকে সেই ডেরায়। ইয়াবা না পেয়ে অনেকেই মদের বারের দিকে ঝুঁকছেন। রমজান মাসে সাধারণত রাজধানীর বারে ভিড় কম হয়। এবারো তেমনই হচ্ছিল। কিন্তু গত তিন দিন বারে নতুন নতুন মুখের ভিড় বেড়েছে।

বাংলা মোটরের শ্যালে, ইস্কাটনের গোল্ডেন ড্রাগন, মগবাজারের পিয়াসী, মহাখালীর হোটেল জাকারিয়া, রুচিতা, ব্লুমুন, কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল, ঢাকা কলেজের সামনের গ্যালাক্সি, ফার্মগেটের রেডবাটন, শুক্রাবাদের এরাম, গুলিস্তানের পূর্বাশাসহ রাজধানীর বিভিন্ন বারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফতার শেষে নতুন নতুন মুখ ঢুকছে।

এ ব্যাপারে গতকাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আজিজুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, মদ তো মাদক নয়। এটা কেউ বারে গিয়ে খেলে আমাদের কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, যদি এমন হয় ইয়াবা না পেয়ে তারা বারে যাচ্ছে, তা হলেও তো দোষের কিছু নেই। কারণ ইয়াবা হচ্ছে মরণনেশা। এ নেশাটি মানুষের জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয়।