মামলার হাজিরা নাকি বনভোজন?

বাড়ির উঠানে ৯ শতাংশ জমির ওপর নতুন করে আরেকটি বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়া। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা। আর সেই ঘটনা গড়ায় আদালত পর্যন্ত।

বাদী পক্ষ চুরি ও জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই নারীসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আর এমন ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাতুর ইউনিয়নের মুখর গ্রামে।

কিন্তু সামান্য এ বিষয় যে আদালত পর্যন্ত গড়াবে তা কল্পনা করতে পারেননি বিবাদী পক্ষ। এতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বিবাদী পক্ষ।

বৃহস্পতিবার সকালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন বিবাদী পক্ষ। এতোগুলো মানুষ বাসযোগে শহরে আসতে এবং খাবার খেতে অনেক টাকা খরচ হবে এই ভেবে তারা ভটভটি ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন আদালতে। সঙ্গে এনেছিলেন লাকড়ি, চাল,পাতিলসহ রান্না করার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। আদালত পাড়ায় আসার পর রান্নার কাজ শুরু করেন বিবাদীপক্ষের সঙ্গে আসা বাড়তি দুজন লোক।

মামলায় হাজিরা দেয়ার পর দুপুর ২টার দিকে আদালত পাড়ার পূর্বদিকে গণপূর্ত অফিসের সামনে সবাই বনভোজনের মতো খাবার খাচ্ছিলেন। কেউ চটি পেড়ে, কেউ পায়ে ভর দিয়ে, আবার কেউ মাটিতে বসেই খাচ্ছিলেন। এদের মধ্যে আবার কেউ সাকিদারী করছেন।

দেখলে মনে হবে আদালত পাড়ায় কোনো অনুষ্ঠান চলছে। আর সেখানে সবাই খাবার খাচ্ছেন। মামলায় হাজিরা দিতে এসে ব্যতিক্রম এমন দৃশ্য দেখে লোকজন অনেকটা অবাক হয়েছেন।

বিবাদী পক্ষের নওফেল হাসান নামে একজন বলেন, সামান্য একটু জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আদালত পর্যন্ত গড়াবে তা কল্পনাই করতে পারিনি। সেই মামলায় আবার এতগুলো আসামি। শুধু শুধু হয়রানির শিকার হচ্ছি দু’মাস থেকে। দুইবার আদালতে হাজিরা দিলাম। কবে জামিন হবে বুঝতে পারছি না।

আমজাদ হোসেন নামে আরেকজন বলেন, বাড়ি থেকে আদালতে আসা-যাওয়ার খরচ জনপ্রতি প্রায় ১২০ টাকা। হোটেলে শুধু ডাল, ডিম ও ভাত খেলে জনপ্রতি প্রায় ৫০/৬০ টাকা খরচ। মাছ বা মাংস ভাত খেলে আরও বেশি। আমরা হোটেলে না খেয়ে বাড়ি থেকে সবকিছু নিয়ে এসে এখানে রান্না করেছি। মুরগির মাংস ও সঙ্গে আলু। এতে খরচও কম হয়েছে। আবার খাবারের মানও ভালো। তৃপ্তি সহকারে সবাই খেতে পেরেছি।