মালয়েশিয়ার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর বিপুল সম্পদ জব্দ

মালয়েশিয়ার সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ও প্রতিষ্ঠান থেকে লাগেজ ভর্তি নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, জব্দকৃত নগদ অর্থের পরিমাণ ১২ কোটি মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।

গত সপ্তাহে নাজিব রাজাকের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে একযোগে অভিযান চালায় পুলিশ। তিনটি অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, গয়না এবং দামী হ্যান্ডব্যাগ জব্দ করে দেশটির পুলিশ।

পুলিশ জানায়, অভিযানে তারা ২৮৪টি বাক্স ভর্তি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মহিলাদের ব্যবহৃত দামী হ্যান্ডব্যাগ, ৭২ ব্যাগ ভর্তি গয়না ও ঘড়ি এবং বিপুল পরিমাণ রিংগিত ও মার্কিন ডলার জব্দ করেছে। প্রাথমিকভাবে নাজিব রাজাকের জব্দকৃত অর্থের আনুমানিক মূল্য ৮০ কোটি মার্কিন ডলার হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, তার ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় লাগেজ ও ব্যাগ ভর্তি নগদ অর্থ গণনা শেষ হয়েছে। কমার্শিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিসিআইডি) একজন কর্মকর্তা জানান, সোমবার অর্থ গণনা শুরু হয়, যা বুধবার শেষ হয়েছে। কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করা নিশ্চিত করতে তদন্ত কর্মকর্তারা পর্যাপ্ত সময় নিয়েছেন।

কর্মকর্তারা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুলিশের কর্মকর্তারা মিলে প্রায় ৩০ ব্যাগ নগদ অর্থ গোনা শেষ করেছে। সবমিলে হয়েছে ১২ কোটি রিঙ্গিত।’ তবে জব্দকৃত গহনা ও অন্যান্যের পরিমাণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি মালয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

পুলিশি অভিযানের পর নাজিব রাজাক জানান, নির্বাচনের সময় তার জোট বারিসন ন্যাশনালের তহবিলে বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তার অর্থ এগুলো। তবে সেই যুক্তির পক্ষে তিনি কোন প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।

বুধবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সংশ্লিষ্ট তিনটি অ্যাপার্টমেন্টে এ অভিযান চালানো হয়।

ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে পড়ার পর নাজিবকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন মাহাথির। কিন্তু নাজিব সরে না দাঁড়ানোয় তাকে ক্ষমতা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামাতেই ১৫ বছর পর রাজনীতিতে ফেরেন মাহাথির। এক সময়ের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে জিতে ৯২ বছর বয়সে আবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। নির্বাচনে হারের পর ছুটি কাটানোর কথা বলে স্ত্রীসহ দেশত্যাগের উদ্যোগ নিয়েছিলেন নাজিব। নির্বাচনের একদিন পর তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।