মাসুদা ভাট্টির মামলার পর মইনুলকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির ২০ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করেছে আাদালত। টেলিভিশন লাইভে এসে ভাট্টির এক প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তাকে ‘আপনাকে আমি চরিত্রহীন হিসেবে দেখতে চাই’ বলে দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই মামলা করেন ওই নারী সাংবাদিক।

রবিবার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে মামলাটি করেন মাসুদা ভাট্টি। বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারা অনুযায়ী বাদীর জবানবন্দি শুনে এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে তিনি মইনুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।

মাসুদা দৈনিক আমাদের অর্থনীতির নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। মামলা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সেটাই সবচেয়ে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

গত ১৬ অক্টোবর বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরের সংবাদপত্র নিয়ে আলোচনার অনুষ্ঠান ‘একাত্তর জার্নালে’ অংশ নেন মাসুদা। সেই অনুষ্ঠানে লাইভে যোগ দেন মইনুল হোসেন।

তার তিন দিন আগে ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, বিএনপি, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডিকে নিয়ে গঠন করা জাতীয় ঐক্যে যোগ দেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের উপদেষ্টা মইনুল। আর এরপর জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সংগঠনটির প্রশংসা করে মইনুলের বক্তব্যের ভিডিও প্রচার হয়।

মাসুদা ভাট্টি এই ভিডিওর বিষয়ে প্রচার নিয়ে মইনুলের কাছে জানতে চান, তিনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন কি না। আর এতে উত্তেজিত হয়ে মইনুল বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’

এই বক্তব্যের পর তীব্র সমালোচনা শুরু করে মইনুল হোসেন ফোন করে মাসুদা ভাট্টির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েও একে ভুল বোঝাবুঝি বলেন।

এ ঘটনায় মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে গত শনিবার বিবৃতি দেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫৫ সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। মইনুল হোসেনকে ‘বয়কট’ করার জন্য নারীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিও।

জামালপুরেও মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। যুব মহিলা লীগ নেত্রীর আহ্বায়ক ফারজানা ইয়াসমিন লিটা ২০ হাজার কোটি টাকার মামলা করার পর এই আদেশ জারি করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম সোলায়মান কবির।