মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলের জঘন্য অস্ত্র ব্যবসার মুখোশ উন্মোচন করার জন্য এক হয়েছেন। তাদের কাছে যথেষ্ঠ প্রমাণাদি রয়েছে যে ইসরায়েল বিশ্বের বিভিন্ন নিপীড়ক শাসক গোষ্ঠির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে থাকে। স্বৈরাচার ও নিপীড়ক সেসব শাসকগোষ্ঠি যারা নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড, জাতিগত নিধন ও গণহত্যা চালায় তাদেরকে অস্ত্র ও সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে ইসরাইল।

ইসরাইলের এই গোপন বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে যখন স্পষ্ট হয় দেশটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেখানে মিয়ানমারের উপর অস্ত্র অবরোধ আরোপ করেছে সেখানে ইসরাইল তার অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর ‘জাতিগত নিধন’ চালিয়ে যাওয়ার জন্য গত মাসে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও এর বিরুদ্ধে হুশিয়ারি জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সাথে ইসরাইলের কেমনতর সম্পর্ক আছে তার বিস্তারিত কিছু জানায়নি ইসরাইল। কিন্তু কিছু পাবলিক রেকর্ডে দেখা যায় মিয়ানমারে বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে ইসরাইল। তার মধ্যে আছে সশস্ত্র প্যাট্রল বুট, অস্ত্র ও নজরদারীর সরঞ্জাম। এমনকি মিয়ানমারের স্পেশাল ফোর্সকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন আগামী ৩০ অক্টোবর ইসরাইলের সংসদ ভবনের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসরাইলি বিভিন্ন ফার্ম যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করে দক্ষিণ সুদানের মিলিশিয়াদের হাতে অস্ত্র ও নজরদারি সরঞ্জামাদি সরবরাহ করেছে। ২০১৩ তে সেখানে গৃহযুদ্ধ চলছে যেখানে অন্তত ৩ লাখ সুদানি নিহত হয়েছে বলে জানায় আল জাজিরা।

মিয়ানমার, দক্ষিণ সুদানসহ আরও যেসব দেশে ইসরাইল অস্ত্র বিক্রি করেছে সেগুলো হচ্ছে রুয়ান্ডা, বলকান, চিলি, আর্জেন্টিনা, শ্রীলঙ্কা, হাইতি, এল সালভেদর ও নিকারাগুয়া। সেই দেশগুলোতে গণহত্যা ও জাতিগত নিধন চলাকালে অস্ত্র সরবরাহ করেছে ইসরাইল। এছাড়া বর্ণবাদী দক্ষিণ আফ্রিকার সাথেও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রেখেছিল ইসরাইল।

ইসরাইলের ওপেন ইউনিভার্সিটির একজন গণহত্যা বিষয়ক গবেষক ইয়ার আরুন মনে করেন, মিয়ানমারের মতো শাসক গোষ্ঠির কাছে অস্ত্র বিক্রি মানে হলোকাস্টের সময় নাজি জার্মানিতে অস্ত্র পাঠানো।

আল জাজিরার কাছে তিনি বলেন, ‘এসব অস্ত্র বিক্রি আমাকে এবং সব ইসরাইলিকে অপরাধী বানাচ্ছে কারণ সেগুলো আমাদের নামে পাঠানো হচ্ছে। আমরা একটা গণহত্যায় রসদ দিচ্ছি।’