মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আরও সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক চায় চীন

আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে চীন আরও নিবিড় সম্পর্ক চায় বলে জানিয়েছেন চীনের এক সিনিয়র জেনারেল। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকদিন ধরেই চীন ও মিয়ানমারের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই ভালো। তেল ও গ্যাস সেক্টরে তাদের বেশকিছু প্রকল্প চলছে। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটেও সারাবিশ্ব মিয়ানমারের সমালোচনা করলেও পাশে দাঁড়িয়েছে চীন।

সম্প্রতি মিয়ানমার সফরে গিয়ে সিনিয়র জেনারলে লি জুচেং বলেন, মিয়ানমারের উন্নয়ন চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার কারণে দুই দেশের সামরিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ।’

গত ২৫ আগস্ট রাখাইসে সহিংসতার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রও একে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলেছে।

তবে শুরু থেকেই মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে চীন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চীন দুই দেশের সামরিক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কারিগরী দিকে বিনিময় চায়ন। এতে করে দুই দেশের প্রতিরক্ষা খাত আরও শক্তিশালী হবে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিবৃতিতে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

মিয়ানমারে সামরিক শাসনের সময় পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও পাশে ছিলো চীন। সম্প্রতি তেল গ্যাস ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রকল্প শুরু করেছে দুই দেশ। বঙ্গোপসাগর থেকে গ্যাস উত্তোলন করে মিয়ানমার। চীনের ‍ইউনান প্রদেশে তেল আমদানির জন্যও মিয়ানমারের মধ্যে দিয়ে একটি পাইপলাইন তৈরি করা হয়েছে।

এতে করে চীনে তেলের নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে সামরিক সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের করে যুক্ত হতে শুরু করে। বিশেষ করে ২০১৫ নির্বাচনে অং সান সু চির জয়ের পর এটা আরও বেড়ে যায়।

তবে সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ শুরু করলে সারাবিশ্ব বিরোধীতা শুরু করে মিয়ানমারের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিধনযজ্ঞে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, মিয়ানমারের পাশে থাকার জন্য চীনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল অং মিন হ্লাং।