মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বেহাল দশা, সম্পত্তি বিক্রির পরামর্শ

ভালো নেই মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠানগুলো। ট্রাস্টের ৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লোকসানের কারণে সাতটি প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। আরও সাতটি প্রতিষ্ঠান থেকে পুঁজি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি ১৮টি প্রতিষ্ঠান চলমান। বাণিজ্যে সুবিধা করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটির সম্পত্তি বিক্রির পরামর্শ এসেছে।

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৯তম বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। বৈঠকের কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আজহারুল হক এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে কমিটিতে উপস্থাপন করেন।

তথ্য অনুযায়ী ট্রাস্টের মিমি চকলেট লিমিটেড চালু, তবে তা লোকসানে। পারুম (ইস্টার্ন) লি. এর কিছু জমির জন্য ভূমি আপিল বোর্ডে মামলা আছে। তবে জটিল নয়, শিগগিরই এর সমাধান হবে। তাবানী বেভারেজ কোম্পানি ২০০৮ সাল থেকে বন্ধ।

ঢাকার মোহাম্মদপুরে গজনবী রোডে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। ফেরত এলে দ্রুত বরাদ্দ দেয়া হবে।

সংসদ সদস্য আফছারুল আমীন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তারা ডেপুটেশনে আছেন। তারা স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারেন না। তারা কাজে গুরুত্ব দিতে পারেন না এবং কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় না। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে বাঁচাতে হলে ডেপুটেশনের পরিবর্তে নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।

কমিটির সদস্য কামরুল লায়লা এমপিও নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালনার পক্ষে মত দেন।

স্বপন ভট্টাচার্য এমপি বলেন, এমন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এত সম্পত্তি রক্ষা করা কঠিন। তাই মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মূল্যবান জমি বিক্রির পরামর্শ দেন তিনি।

কমিটির সভাপতি সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কোকোকোলা পানীয় প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত লস করেছে, যা পৃথিবীর কোনো দেশ করেনি। ডেপুটেশনের কর্মকর্তা দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সম্পদ রক্ষা করা যাবে না। এ জমি যেকোনো সময় বেহাত হতে পারে। ভাড়াটিয়ারা বিভিন্ন অজুহাতে মামলা করে ভাড়াও দিচ্ছেন না। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গজনবী রোডের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স যে কোনো সময় অবৈধ দখলে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্পত্তি যেগুলো দেখভাল করা কষ্টকর, রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব এবং দিনের পর দিন লস দিচ্ছে সেগুলো বিক্রি করে দেয়া যেতে পারে। চট্টগ্রামের দেলোয়ার পিকচার্স এর স্থানে ডেভেলপার দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করে তা বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে।

এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক ও হুইপ ইকবালুর রহিম।