মুসলিমদের আবারও উইপোকা বললেন অমিত শাহ

ভারতীয় জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষকে আবারও উইপোকা বলে অভিহিত করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহ। তার ভাষায় ওইসব ব্যক্তিরা সবাই ‘অনুপ্রবেশকারী’।

অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আসামে বসবাস করলেও তাদের নাম উঠেনি চূড়ান্ত তালিকার খসড়ায়। বাদ পড়া ওই ব্যক্তিদের বেশিরভাগই মুসলিম।

‘তারা ভারতীয় নন, এ দেশে থাকার তাদের কোনো অধিকার নেই’- বিজেপি শাসিত কেন্দ্রের তরফে কার্যত এমনই বার্তা দেয়া হয় তাদের। নাম বাদ পড়া বাঙালিদের একটা অংশ পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাক সেনার অত্যাচারে দেশ ছেড়ে আসামে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে দাবি আসামের বর্তমান বিজেপি সরকারের।

শনিবার মধ্যপ্রদেশের রাতলামের জনসভায় অমিত শাহ বলেন, দেশের সুরক্ষার জন্য একটি উইপোকাকেও ভারতে থাকতে দেয়া হবে না।

রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, মিজোরাম ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে বছর শেষে (২৮ নভেম্বর) নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছে বিজেপি শিবির।

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে প্রাথমিক জনমত সমীক্ষায় বিজেপি শিবিরের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। এ কারণেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রশ্ন এবং দেশের সুরক্ষার বিষয়কে আপাতত তুরুপের তাস বানিয়েছে বিজেপি।

কিছু দিন আগে রাজস্থানের একটি জনসভায় ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকার ‘ ও ‘উইপোকা’ বলায় শালীনতার সীমা ছাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

মধ্যপ্রদেশে অনুপ্রবেশকারীদের ‘উইপোকা’ বলে অমিত বুঝিয়ে দিলেন আসামের নাগরিকপঞ্জিকে নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে তুলে ধরাই বিজেপির কৌশল। শুধু নাগরিকপঞ্জিই নয়, নির্বাচনী জনসভায় বিজেপি সভাপতি তুলে আনলেন পাঁচ বছর পুরনো মনমোহনের প্রসঙ্গও। মোদির ঘন ঘন বিদেশ সফর নিয়ে সমালোচনার মুখে দাঁড়িয়ে তিনি সামনে আনলেন মনমোহনকেই।

তার অভিযোগ, একের পর এক বিদেশ সফর মনমোহনও করতেন। আর বিদেশ সফরে গিয়ে সোনিয়া গান্ধীর লিখে দেয়া চিঠি পাঠ করা ছাড়া আর কোনো কাজ ছিল না ‘মৌনিবাবা’ মনমোহনের।

তিনি বলেন, অপর দিকে নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরে স্লোগান দিয়ে মানুষ তাকে অভিনন্দন জানায়। রাতলামের জনসভায় মনমোহনকে তুলে আনা আসলে মোদিকে আড়াল করার কৌশল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।