মুসলিম স্বামী, হিন্দু স্ত্রীকে একসঙ্গে থাকার অনুমতি আদালতের

হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করার পর মুসলিম প্রেমিককে বিয়ে করেছেন পাকিস্তানের এক তরুণী। ধর্ম বদলে আনুসি থেকে মারিয়া হওয়া ২১ বছর বয়সী ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, তাকে অপহরণের পর ধর্ম পরিবর্তনে বাধ্য করা হয়েছে। জোর করে তাকে বিয়ে দেয়া হয়েছে মুসলিম তরুণের সঙ্গে।

কিন্তু ওই তরুণী আদালতে জানান, জোর জবরদস্তি করা হয়নি, তিনি স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। দাবির সমর্থনে আদালতে আরবিতে প্রার্থনা করেন তিনি।

নিজেদের ইচ্ছায় বিয়ে করায় হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে আদালতের কাছে নিরাপত্তা চায় মারিয়া ও তার স্বামী বিলাওয়াল আলী ভুট্টো।

মারিয়ার মা আদালতে বলেন, তার আশঙ্কা, বিলাওয়াল কিছুদিন পরে মেয়েকে ত্যাগ করতে পারেন। মেয়েকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হোক। যাতে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাকে বোঝানো যায়।

বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকি মারিয়াকে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করতে বললেও রাজি হয়নি।

বিচারপতি বলেন, আমার মতে, আবেদনকারী মারিয়াকে তার বাবা-মায়ের হেফাজতে তুলে দেয়া যায় না। কেননা তাকে মুসলিম থেকে আবার হিন্দু হতে বাধ্য করা হতে পারে। সেই প্রয়াস সফল হলে মেয়েটি আরো বিপদে পড়বে।

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সদস্য ও পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের পৃষ্ঠপোষক রমেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানি বলেন, এ প্রবণতা সমাজের মৌলিক বুনিয়াদ ধ্বংস করছে। এই বিষয়ে আদালতের নজর দেয়া উচিত।

হিন্দু সমাজে পরিবারের সম্মান রক্ষায় দম্পতিকে মেরে ফেলার রীতি নেই। বাবা-মায়ের কাছে ফিরে গেলে মারিয়ার খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি।

আদালত তার কাছে জানতে চায়, তিনি মারিয়া ও বিলাওয়ালকে নিজের কাছে রাখতে আগ্রহী কিনা। ভাঙ্কওয়ানি জানান, কাউন্সেলিং করানোর জন্য শুধু মারিয়াকে তার হেফাজতে দেয়া যেতে পারে।

শেষে ওই দম্পতি ইসলামাবাদে একসঙ্গে থাকতে পারবেন জানিয়ে স্থানীয় পুলিশকে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারপতি। এবিপি আনন্দ।