মোকাব্বিরের শপথ, চাপ বাড়ছে বিএনপির ভেতরেও

বাংলাদেশে গণফোরামের আরেক নেতা মোকাব্বির খান সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরীকদের মধ্যে আস্থার সংকট আরো তীব্র হবে বলে এই জোটের নেতাদের অনেকে বলেছেন।

একইসাথে তারা বলেছেন, মি খানের এই শপথ বিএনপির নির্বাচিত এমপিদের ওপর এক ধরণের মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করতে পারে।

বিএনপি থেকে যে ছয়জন এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া অন্যদের দলের কেন্দ্রীয় এবং জাতীয় রাজনীতিতে কোনো অবস্থান নেই। ফলে, গণফোরামের দুই নেতার শপথের পর, তাদের মাঝে সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে একটা মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে ধারণা করছেন দলের নেতৃত্ব।

অন্যদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিএনপি নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কোনো শর্তের প্রশ্ন এলে বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়া বা না যাওয়ার বিষয়কে কৌশল হিসেবে ব্যবহারের একটা চিন্তাও দলে রয়েছে।

গণফোরামে মতপার্থক্য

দল এবং জোটের সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের পর এখন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানও সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ শপথ নেয়ার সাথে সাথেই গণফোরাম তাকে দল থেকে বহিস্কার করেছিল। তবে এখন মোকাব্বির খান শপথ নেয়ার পর দলটি এখনও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

মি: খান দাবি করেছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই শপথ নিয়েছেন। “দলের প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আমি শপথ নেবো। এর ভিত্তিতে আমি শপথ নিয়েছি।”

তবে এই বক্তব্য সঠিক নয় বলে বলছেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাদের অনেকে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণফোরাম শপথ না নেয়ার অবস্থানেই রয়েছে।

কিন্তু দলটির অন্য একাধিক নেতা বলেছেন,শপথ নিয়ে সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের দলের শীর্ষ নেতা ড: কামাল হোসেনের মৌন সমর্থনে আছে বলে তাদের মনে হয়েছে।

জোটে কি প্রভাব পড়ছে?

৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ড: কামাল হোসেনকে নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন বিএনপির একাধিক নেতা।

এখন গণফোরামের নির্বাচিত দু’জনই শপথ নেয়ায় সেই আস্থার সংকট আরও বাড়বে বলে এই জোটের নেতাদেরই অনেকে বলছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলছিলেন, বিএনপিতেও নেতৃত্বের সাথে তৃণমুলের আস্থার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।

“বিএনপির হাইকমান্ডের ওপর তৃণমুলের যে পার্থক্য বা আস্থার অভাব হয়েছে। এখন তৃণমুল আরও বেশি অসন্তুষ্ট হবে।অ নেকে বলেছে যে, ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে নির্বাচনে যাওয়াটাই ভুল হয়েছে। সেই ধারণাটা তাদের মধ্যে আরও দৃঢ় হবে।”