মোদি-হাসিনার বৈঠকে নজর দক্ষিণ এশিয়ার

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরাসরি কূটনৈতিক সফর নয়, তবে ভারত ও বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর দেখা মানেই তাতে আন্তর্জাতিক কূটনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয়৷ বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ মোদি-হাসিনার বৈঠকের দিকে লক্ষ্য রাখছে৷ দুই প্রধানমন্ত্রীর মাঝে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, শান্তিনিকেতনের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার মধ্যে আলোচনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ মিনিট সময় ধার্য করা হয়েছিল৷ পরিস্থিতি অনুধাবন করে সেই বৈঠকের সময় ৬০ মিনিট পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসা নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা তুঙ্গে৷

হাসিনা-মোদির বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বিশেষ গুরুত্ব পাবে৷ পাশাপাশি, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় নয়াদিল্লি ও ঢাকার যৌথ পদক্ষেপ আরও কতটা শক্তিশালী করা যায় সেই সংক্রান্ত কিছু বিষয় থাকতে পারে আলোচনায়৷ ফলে কবিগুরুর শান্তিনিকেতন কয়েক ঘণ্টার জন্য আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রভূমি৷

দুই রাষ্ট্রের মধ্যে তিস্তা পানিবন্টন চুক্তি নিয়েও কিছুটা কথা হবে৷ কারণ ইস্যুটি বাংলাদেশের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷

যদিও আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিস্তার পানি এমনিতেই কম তাই বাংলাদেশ অন্য কোনও নদীর পানি নিতে পারে৷ দিল্লিতে সেই আলোচনা মীমাংসা না হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন শেখ হাসিনা৷ বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তিস্তার পানিবন্টন হলে তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে৷

মোদি-হাসিনা বৈঠকে কী কী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়, সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে চীন-মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্র৷ এর মধ্যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে নন্দিত৷ আবার লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা৷

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট, মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলি ভারত ও বাংলাদেশে নাশকতা ছড়াতে তৎপর৷ রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, এই দেশেও হচ্ছে অনুপ্রবেশ৷ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আরও আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারতকে আহ্বান জানাতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বৈঠকের দিকে তাকিয়ে মিয়ানমার সরকার৷

সম্প্রতি চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়েছে নয়াদিল্লি৷ পরে ঢাকার তরফে জানানো হয়, চীনকে নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই ভারত আমাদের বড়বন্ধু৷

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, চীন থেকে বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্রয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার ক্রয়, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হবে মোদি-হাসিনার৷ স্বাভাবিকভাবেই চীনও নজর রাখছে বৈঠকে৷