মৌলভীবাজারে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মনু নদীর বাঁধের দুই অংশের প্রায় ৪৫০ ফুট অংশ ভেঙে যাওয়ায় ৩০টি গ্রামের প্রায় দু’শতাধিক ঘর বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ফলে তিন দিন ধরে টানা বর্ষণে সৃষ্ট তীব্র স্রোতে বাঁধটি ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে।

রবিবার ভোররাতে বাঁধ ভেঙেছে বলে মনু নদীর তীরবর্তী হাজিপুর, শরীফপুর, টিলাগাঁও ইউনিয়নের স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর ব্রীজের পাশে প্রায় ৪০০ ফুট এবং হাজিপুর ইউনিয়নের আশ্রয়গ্রাম এর পাশে প্রায় ৮০ ফুট বাঁধ ভেঙ্গেছে বলে উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বৈরি আবহাওয়ার কারণে তিন দিন যাবৎ টানা বর্ষণের পানির তীব্র স্রোতের ধকল সামলাতে না পেরে মনু নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে।

এদিকে, নদী তীরবর্তী প্রায় ৫টি ইউনিয়নের অর্ধ-শতাধিক গ্রাম ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে গেছে। নদীর সন্নিকটে অবস্থিত গ্রামের বসতবাড়ি ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে। আশ্রয়গ্রামের শামসি বেগম, দেবাশীষ ভট্টাচার্য, আব্দুল মালিক, আব্দুল ওয়াহিদ, আব্দুল আলীর ঘর ভেঙে বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। নাম না জানা আরও অনেকের ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নদী তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে কৃষকের ফলানো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গৃহপালিত প্রাণী (গরু ছাগল, হাঁস, মুরগী) ভেসে যাচ্ছে পানির স্রোতে।

দেখা ছাড়া কিছুই করার উপায় নেই স্থানীয়দের। এমতাবস্থায় কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোহাম্মদ গোলাম রাব্বী মনু নদীর বাঁধ ভাঙার স্থান পরিদর্শন করেছেন।

পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীফপুর ইউনিয়নের ইটারগাট, পারিয়ারঘাট, কালারায়েরচর, দত্তগ্রাম, নিশ্চিন্তপুর, মানগাও, নসিরগঞ্জ, তিলোকপুর চা বাগান, পালকীছড়া চা বাগান গ্রাম, হাজীপুর ইউনিয়নের কেওলাকান্দি, বিলের পার, আশ্রয়গ্রাম, চাঁনগাও, ভুইগাও, ইসমাইলপুর, রনচাপ গ্রাম টিলাগাও ইউনিয়নের বালিয়া কিশোবপুর, বালিয়া, ঢিলেরপাড়, লালভাগ গ্রামসহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক গ্রাম।

শরীফপুর ইউনিয়নের সৈয়দ কামাল উদ্দিন জানান, স্মরণকালে এরকম ভয়াবহ বন্যার স্রোত আমি দেখিনি। পুরো ইউনিয়ন পানিতে ভেসে গেছে। মানুষের কৃষি-ক্ষেত, খামার সব পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক মানুষের ঘর বাড়ি ভেঙে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী গোলাম রাব্বী জানান, শরীফপুর এবং হাজিপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ইতিমধ্যে আমরা প্রায় ৫০০ ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছি। আরও ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহের ব্যবস্থা করছি। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫-৩০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।