যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের মাথায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মুকুট

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মুকুট উঠলো যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের মাথায়। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনালে তারা টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে তাজিকিস্তানকে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা গোলশূন্যভাবে শেষ হলে শিরোপা নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে।

৬ জাতির টুর্নামেন্টে দুই টপ ফেভারিটের ফাইনাল ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার পনের দর্শক ফাইনাল দেখেছেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে। নিরাশ হননি তারা, একটি প্রাণবন্ত ফাইনাল দেখার তৃপ্তি নিয়েই ঘরে ফিরেছেন।

নির্ধারিত ৯০ মিনিট, অতিরিক্ত ৩০ মিনিট আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ থাকলেও গোল নামের সোনার হরিণ ধরা দেয়নি কোনো দলকে। তাই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের সর্বশেষ ব্যবস্থা টাইব্রেকারেই খুঁজে দেয় চ্যাম্পিয়ন দল।

অতিরিক্ত সময়ে টেনে নিয়ে কৃতিত্বই দেখিয়েছেন তাজিকিস্তানের খেলোয়াড়রা। তারা ১২০ মিনিটের মধ্যে ৮৬ মিনিটই খেলেছেন ১০ জন নিয়ে। ৩৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে মাথা দিয়ে ঢুস মেরে লাল কার্ড দেখেছিলেন তাজিকিস্তানের অধিনায়ক ফাতখুল্লু।

ফাইনাল শেষে চ্যাম্পিয়ন তাজিকিস্তান দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

ম্যাচের প্রথম সুযোগটি তৈরি করেছিল ফিলিস্তিন। ২৩ মিনিটে হেলাল মুসার জোড়ালো শট বাম দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন তাজিকিস্তানের গোলরক্ষক রিজুয়েভ রুস্তম। তিন মিনিট পর খালেদ সলেম তৈরি করেছিলেন সহজ সুযোগ। দুই ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে শট নিলে তা ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ৩০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ইসলাম বাতরানের শট ফিস্ট করেন তাজিক গোলরক্ষক।

৩৪ মিনিটে উত্তেজনা ও খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে। তাজিকিস্তানের ফাতখুল্লুকে ফাউল করেন ফিলিস্তিনের মারাবাকে। তারপর ফাতখুল্লু উঠে মাথা দিয়ে গুঁতো দেন মারাবাকে। তারপর শুরু হয় দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি। বাংলাদেশের রেফারি মিজানুর রহমান লালকার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন তাজিকিস্তানের অধিনায়ক ফাতখুল্লুকে। বাকি ৮৬ মিনিট তাজিকিস্তানকে খেলতে হয় ১০ জন নিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিলিস্তিন প্রথম সুযোগ তৈরি করে ৫০ মিনিটে। বাম দিক দিয়ে ঢুকে যে শট নেন তিনি, তা লাফিয়ে ফিস্ট করে বাইরে পাঠান তাজিকিস্তানের গোলরক্ষক রিজুয়েভ রুস্তম। ৬ মিনিট পর এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় তাজিকিস্তান। কিন্তু মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা বলের ফ্লাইট মিস করলে এরগাসেভ জাহাঙ্গীর সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।

ম্যাচটা নির্ধারিত সময়েই শেষ হতে পারতো। ইনজুরি সময়ে তাজিকিস্তান পেয়েছিল ম্যাচের অন্যতম সহজ সুযোগ। ডান দিক থেকে বদলি ওইবেকের ক্রসে পা লাগাতে পারেননি আরেক বদলি খেলোয়াড় বোজোরভ দিলশদ।

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের প্রথমার্ধে গোল করার সুযোগ এসেছিল ফিলিস্তিনের। দুর্ভাগ্য পশ্চিম এশিয়ার দলটির। ৯৭ মিনিটে ফিলিস্তিনের পাবলো ব্রাভোর শট বাইরে চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ম্যাচটা টাইব্রেকারে না-ও গড়াতে পারতো। ১২০ মিনিটে ফিলিস্তিন পেয়েছিল বক্সের মাথায় একটি ফ্রি-কিক। সেখান থেকে আলবাদারির হেডের পর ফিরতি বলে পাওয়ারফুল হেড নিয়েছিলেন বদলি ফরোয়ার্ড দাবাঘ। কিন্তু বল ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেলে হাতছাড়া হয় তাদের শেষ সুযোগটি।