যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা হবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক

যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করার জন্য বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাজাকারের সন্তানরা যাতে সরকারি চাকরি না পায় সেই ব্যবস্থাও নিতে হবে বলে জানান তিনি।

(শনিবার) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার প্রত্যয়’ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, জামায়াত-শিবির, রাজাকারের সন্তানরা যাতে সরকারি চাকরি না পায়, তাদের সন্তানেরা যাতে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে থাকে তার জন্য যা যা করণীয় সরকার সেই ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমেই সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ বহাল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে পারেন তবে, ২০০১ সালের হত্যাকাণ্ড, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের নির্বাচন প্রতিরোধের নামে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদেরও বিচার করতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলেই হবে না তাদের সন্তানরা যাতে কোনো সরকারি চাকরি না পায় তার জন্য যা যা করণীয় সরকার অবশ্যই তা করবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি যাতে কেয়ামত পর্যন্ত থাকে তার জন্য সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কমপ্লেক্স, দেশের বিভাগীয় জেলা ও উজেলায় স্মৃতিস্তম্ভ। মোবাইলে ভাতা চালু হবে, ৩ মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ডিজিটাল সর্টিফিকেট বরাদ্দ করা হবে।

সমাবেশের সভাপতি নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান তার বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-

মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হলেও জামায়াত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান যাতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধী যারা সরকারের ভিতরে থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও জামায়াত-শিবির দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী এবং মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের নিয়ে কটাক্ষকারীদের দেশদ্রোহী হিসেবে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০০১, ১৩, ১৪ ও ১৫ সালের তাণ্ডবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। কোটা সংস্কারের নামে অগ্নি সংযোগ, নাশকতা, অরাজকতা, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম, জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ।