যে কারণে গাজরের রস খাওয়া উচিত

গাজর শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটা রান্নার চেয়ে কাঁচা খাওয়াই উত্তম।

এজন্য কাঁচা গাজর দিয়ে সালাদ তৈরি করে খাওয়াটাই বেশি প্রচলিত। অনেকে আবার আস্ত গাজর দিব্যি খেয়ে ফেলেন। তবে গাজরের রসও কিন্তু ভীষণ উপকারী। তবে আগে জেনে নিন কেন খাবেন?

শীতকাল এসে গেছে। তাই কুয়াশা আর ঠাণ্ডায় এবার জ্বর-সর্দি কাশির আক্রমণে জর্জরিত হতে হবে অনেককে। কিন্তু একটা কাজ যদি করেন, তাহলে এই শীতেও শরীর থাকবে একেবারে চনমনে এবং রোগ মুক্ত! শুধু বাজার থেকে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে আসতে হবে অনেক অনেক গাজর আর প্রতিদিন পান করতে হবে এক গ্লাস করে গাজরের রস। এমনটা করলে শরীর ভিতর থেকে এত শক্তিশালী হয়ে উঠবে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। সেই সঙ্গে মিলবে আরও অনেক উপকারিতাও।

১. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে : শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিক উপাদান বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
প্রসঙ্গত, শীতকালে নানা কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল হয়ে যায়।

২. চোখকে সুরক্ষিত রাখে : দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে গাজরের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই সবজিটির ভেতরে থাকা ভিটামিন এ এবং উপকারি বিটা ক্যারোটিন চোখের ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ছানি পড়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

৩. হার্টকে সুরক্ষিত রাখে : ১০০ গ্রাম গাজরে থাকে দিনের চাহিদার প্রায় ৩৩ শতাংশ ভিটামিন এ, ৯ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ বি৬। সেই সঙ্গে প্রচুর মাত্রায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সবকটি উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্যে এসে দাঁড়ায়।

৪. ত্বক ভালো রাখে : শীতকাল মানেই স্কিনের আদ্রতা হারিয়ে যাওয়া এবং সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। এমন পরিস্থিতিতে ত্বককে বাঁচাতে পারে একমাত্র গাজর। কারণ এই সবজিটির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ভেতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তবে এখানেই শেষ নয়, গাজরের অন্দরে থাকা একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করতে, কালো কালো ছোপ দাগ কমাতে এবং বলিরেখা ভ্যানিশ করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করে : গাজরে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ টুকু পায় না।

৬. লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায় : বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে লিভারের ভেতরে থাকা বর্জ্য পদার্থদের বের করে দিয়ে শরীরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বাড়াতে গাজরের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৭. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : বুড়ো বয়সে আর্থ্রাইটিসের মারে যদি শয্যাশায়ী হতে না চান, তাহলে এখন থেকেই গজরের রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড়ের শক্তি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।