যে কারণে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা

প্রায় ৭০ বছরের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি লঙ্ঘন করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই স্বীকৃতির আসল কারণ হচ্ছে, তার আশঙ্কা, তিনি যদি এই স্বীকৃতি না দেন তাহলে মার্কিন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ভোট ব্যাংক হারাবেন তিনি।

ট্রাম্পের উপদেষ্টারাও বলেছেন, গত বছরের মার্কিন নির্বাচনে দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর সে কারণেই ট্রাম্পের এই স্বীকৃতিকে ব্যাপক ও উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছেন তার সমর্থক মার্কিন ইভাঞ্জেলিকাল খ্রিস্টানরা। কিন্তু ফিলিস্তিনসহ সারা বিশ্বের মুসলিম এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিন্দা ও বিক্ষোভ জানাচ্ছে।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, সারা বিশ্বের নেতাদের হুশিয়ারি সত্ত্বেও বুধবার ট্রাম্প এ ব্যাপারে ঘোষণা দেন। এরপরই ও যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিস্টানরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এবং ‘জেরুজালেম প্রেয়ার’ বলে এক প্রার্থনা কর্মসূচির ডাক দেয়।

তাদের প্রচারিত একটি বার্তায় বলা হয়, ‘প্রভু, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভালো করুন। সফলতার পেছনের আসল নীতিগুলো তিনি বোঝেন। এটা শুধু কাজ ও জ্ঞানবুদ্ধিতে ভেলা হওয়ার ব্যাপার নয়। এটা হচ্ছে, প্রভুর আশীর্বাদের পাশে থাকার ব্যাপার। যিনিই ইসরাইলকে আশীর্বাদ করবেন, তিনি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন। আর যিনিই ইসরাইলকে অভিশাপ দেবেন, তিনি অভিশপ্ত হবেন।’

আরেকটি বার্তায় বলা হয়েছে, ইসরাইলের কিছু ত্রুটি ও বিশ্বাসের অভাব থাকা সত্ত্বেও আমরা যদি তাদের আশীর্বাদ করি, প্রভুও আমাদের প্রতি আশীর্বাদ করবেন। বিশ্বের নিন্দার মাঝেও পরিণাম যা-ই হোক ট্রাম্প দক্ষতার সঙ্গে সঠিক কাজটিই করেছেন।’

প্রার্থনা কর্মসূচিটির এই বার্তা শুধু ইহুদিবাদে বিশ্বাসীদের কাছেই পাঠানো হয়নি, বরং সাংবাদিকদের মতো (যারা খ্রিস্টানদের অধিকার ও ট্রাম্পের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন) অন্যদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

প্রার্থনা কর্মসূচির আয়োজকরা জেরুজালেম প্রেয়ার বা প্রার্থনার গুরুত্বের ব্যাপারে জোর দিয়ে বলছেন, মার্কিন দূতাবাস ইসরাইলের বর্তমান রাজধানী তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়া মর্মে ট্রাম্পের ঘোষণার পর এ প্রার্থনা কর্মসূচি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন।

এক পরিসংখ্যান মতে, আমেরিকায় বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর মানুষ রয়েছে। এরা বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে। সাম্প্রতিক এক জরিপ মতে, ৮২ ভাগ শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান বিশ্বাস করে যে, ইসরাইলের ব্যাপারে প্রভু ইহুদিদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মাত্র ৪০ ভাগ মার্কিন ইহুদি বাইবেলের এই বাণীকে বিশ্বাস করে।