যে কারণে সুচির নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না

মিয়নমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও গণহত্যার পরও নীরবতার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সুচি। এরপরই তার নোবেল শান্তি পুরস্কার কেড়ে নেয়ার জন্য গত কিছুদিন ধরেই দাবি তুলেছেন অনেকে।

তবে ১৯৯১ সালে সুচিকে দেওয়া নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির প্রধান বেরিট রেইস এন্ডারসন।

বিবিসি জানায়, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদেরও অনেকে চিঠি লিখে এবং বিবৃতি দিয়ে আং সান সুচি-কে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে আং সান সুচির নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের আবেদনে সই করেন হাজার হাজার মানুষ।

পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়-এর ব্যাখ্যায় নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির প্রধান বলেন, কাউকে যখন এই পুরস্কার দেয়া হয়, তাঁকে আগের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই দেয়া হয়। ১৯৯১ সালে আং সান সুচি-কে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছিল মিয়ানমারে স্বাধীনতার জন্য সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার কারণে। কিন্তু একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর কি করছেন, তা দেখা আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না, একটা আমাদের কাজও নয়। ”

বেরিট রেইস এন্ডারসন আরও বলেন, “যখন কাউকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়, তখন এক বছর ধরে আমরা অনেক প্রার্থীকে জানার, বোঝার, বিশ্লেষণের চেষ্টা করি। এখন যারা পুরস্কার পেয়ে গেছেন, তাদেরকে একই রকমভাবে পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করা কতটা কঠিন সেটা নিশ্চয়ই আপনার বুঝতে পারেন। সেটা আমাদের এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বাইরে। ”

আং সান সুচির সমালোচনায় যারা মুখর হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন অনেক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু এক চিঠি লিখে আং সান সুচি-কে রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান।

একই সঙ্গে আং সান সুচি-র মতো একজন ব্যক্তিত্ব কিভাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ব্যর্থ হলেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে আরোহনের জন্যই যদি সুচি এই মূল্য দিয়ে থাকেন, সেটা অনেক চড়া মূল্য।