যে বার্তা দিল বিপিএলের প্রথম ম্যাচ

টি-টোয়েন্টি মানেই ভরপুর রোমাঞ্চ। চার-ছক্কার রোমাঞ্চ। রান উৎসবের রোমাঞ্চ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের রোমাঞ্চ। ২০ ওভারের ক্রিকেটে অনেক ম্যাচেই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয় ম্যাচের শেষ বলে। কখনো-সখনো সুপার ওভার রোমাঞ্চও মিলে। এবারের বিপিএলের প্রথম ম্যাচে বলতে গেলে এসবের কোনো রোমাঞ্চই ছিল না।

রংপুর রাইডার্স ও চিটাগং ভাইকিংসের মধ্যকার প্রথম ম্যাচটিতে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামেনি। রান উৎসব তো একেবারেই নয়। শেষ বলের নাটকও হয়নি। কিন্তু তারপরও বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের প্রথম ম্যাচে রোমাঞ্চের কমতি ছিল না। বলতে পারেন ম্যাচের শুরু থেকে শেষ, পুরোটাই ছিল রোমাঞ্চে ভরা। সেটি কিভাবে? ম্যাচটিতে রোমাঞ্চের উপাদান ছিল একটাই-একের পর এক উইকেট পতন।

হ্যাঁ, দুই দলের বোলাররাই ব্যাটসম্যানদের উপর একচ্ছত্র রাজত্ব করেছে। মেতেছে উইকেট আনন্দে। আর সে কারণেই লো স্কোরিং ম্যাচটাও শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মঞ্চ।

দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার রবি ফ্রাইলিঙ্কের তোপের মুখে মাত্র ৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর।

চিটাগং ভাইকিংসের তাই লক্ষ্য ছিল ৯৯ রান। মনে হচ্ছিল, খুব সহজেই বুঝি জিতে যাবে চিটাগং। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জয়টাকে যতটা সহজ মনে হচ্ছিল, চিটাগং জিতেছে ততটাই কষ্ট করে। জয় ধরতে গিয়ে রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে। কাঁপতে হয়েছে হারের শঙ্কায়।

সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম যখন আউট হন, তখনো জয় থেকে ১৪ রান দূরে চিটাগং। মিরপুরে চিটাগং সমর্থকদের চোখে-মুখে তখন হারের শঙ্কাই খেলা করছিল। শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কা মুছে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন বল হাতের নায়ক ফ্রাইলিঙ্ক-সানজামুল জুটি। ৪ বল বাকি থাকতেই তারা দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ১৯.২ ওভার লাগিয়ে ফেলা, ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা। ছোট্ট এই তথ্যটিই বলছি, চিটাগংকে কষ্ট করেই জিততে হয়েছে। আর চিটাগংয়ের এই ঘাম ঝরানো জয়টি বিপিএল দর্শকদের রোমাঞ্চকর এক বার্তাই যেন দিয়ে রাখল-স্কোর যত ছোটই হোক, কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। হারার আগে হার মানবে না কেউ। জয়ের আশায় লড়াই চালিয়ে যাবে শেষ পর্যন্ত। লো স্কোরিং ম্যাচ হলেও লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

ক্রিকেট ম্যাচের আসল মজাটা তো সেখানেই।