রাজধানীতে চালু হচ্ছে ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম’

রাজধানীতে ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম’ চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

রোববার দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ডিএসসিসির নির্মল বায়ু ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প (কেইস) আয়োজিত ‘ক্লিন অ্যান্ড সেইফ মোবিলিটি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।

মেয়র বলেন, প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর ফুলবাড়িয়া, পল্টন, মহাখালী ও গুলশান-১ এ চারটি ইন্টারসেকশন নির্মিত হবে। এতে ভিডিও ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে চলমান গাড়ির সংখ্যা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং হবে। এছাড়া ডিএসসিসির ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৭৫ জন নিয়ে একটি কারিগরি ইউনিট সৃষ্টির প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে যত দ্রুত সম্ভব বাসরুট ফ্রাঞ্জাইজি-ভিত্তিক হবে। অর্থাৎ ছয় কোম্পানির অধীনে বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, বাসরুট ফ্রাঞ্জাইজি করলে সেটি হতে পারে নিরাপদ সড়কের জন্য একটি কার্যকর উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে জরুরি কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিরাপদ সড়ক সৃষ্টি করা, বেপরোয়া গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকা, রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রাক্রসিং ব্যবহারে উৎসাহিত করা, বিনা প্রয়োজনে হর্ণ বাজানো নিরুৎসাহিত করা, পথচারী চলাচলে ফুটপাত ব্যবহার করা, লেন মেনে গাড়ি চলানো, যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা না করে নির্ধারিত স্টপেজে গাড়ি থামানো।

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ৯২টি সড়ক ইন্টারসেকশনে জেব্রাক্রসিং, লেন সেপারেটর ডট ও ২৯৪টি পথচারী পারাপার নির্মাণসহ ৬০০টি ট্রাফিক সাইন লাগানো হবে। আমাদের স্লোগান হবে- ‘আমাদের পথ, আমাদের হাতেই নিরাপদ’- যোগ করেন মেয়র।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিল্লাল, কলামিস্ট আবুল মকসুদ, নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বর হোসেন, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক রকিবুল রহমান প্রমুখ।

গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের এমইএস এলাকায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব।

ওই ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিল, সড়কে মৃত্যুর জন্য দায়ী বেপরোয়া চালকদের মৃত্যুদণ্ডের আইন করা। আন্দোলনের মুখে সরকার দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা সড়ক নিরাপত্তা আইনের যে খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে সেখানে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। তবে তদন্তে ‘ইচ্ছাকৃত হত্যা’ প্রমাণিত হলে গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করার কথা উল্লেখ করা হয়।

ওই সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে নয় দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো মেনে নিয়ে সরকার নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়।