রাশিয়ায় শেষ বিশ্বকাপ খেলবেন মেসি?

কোপা আমেরিকার গত আসরের ফাইনালে চিলির কাছে হেরে হুট করেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেন লিওনেল মেসি। অনেক বোঝানোর পর শেষমেশ আবারও ফিরে আসেন ফুটবলে। অবসর ভেঙে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শুরুটা খুব বেশি রাঙাতে পারেননি লিও। কিন্তু দিন শেষে ঠিকই প্রিয় দেশকে উপহার দেন বিশ্বকাপের টিকিট। ইকুয়েডরের বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করে খাদের কিনারা থেকে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে যান রাশিয়া বিশ্বকাপে। এমন ভালোলাগার দিনে আবারও মেসির সামনে হাজির অবসরের প্রশ্ন। ফুটবলের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘ইএসপিএন এফসি’কে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সে প্রশ্নের উত্তর দিলেন কিং লিও।

এটা কী আপনার শেষ বিশ্বকাপ? উত্তরে নাম্বার টেন বলেন, ‘আমি জানি না। বিশ্বকাপের পর কী হবে সেটাও বলতে পারছি না। রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে এসব নিয়ে কোনো চিন্তা করতে চাই না। বিশ্বকাপ শেষ হোক, তারপর না-হয় দেখা যাবে।’

এদিকে যারা মেসি মেসি বলে চিৎকার করে গলা ফাটান, যারা মেসির জন্য নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে বসে যান টিভি সেটের সামনে, যারা মেসির খেলা দেখার জন্য রাতের ঘুমকে হারাম করে দেন, তাদের দিকেই এবার আঙ্গুল তুললেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনা দলে আমার কথায় নাকি সব হয়? মেসি, ‘এমনটা ডাহা মিথ্যা। জাতীয় দল আমি চালাই না।’

লোকের উপহাস শুনে রাগ হয় মেসির। ‘আসলে অনেকে না জেনেও কথা বলে। এটা আমাকে অনেক রাগান্বিত করে। যদিও সব হাস্য-রস্যের গল্প হজম করার সামর্থ্য আমার আছে। নিন্দুকের সমালোচনা শুনে আমি অভ্যস্ত। দেখুন গত কয়েক বছর ধরে কেবল আমি নয়, আমার সতীর্থদের নিয়েও নানা কটুকথা শুনছি। দিনের পর দিন সমালোচনা শুনে মনে হচ্ছে, পথ চলতে হলে এটাকে নিয়েই চলতে হবে।’

মানুষ বিন্দুমাত্র সন্মান রেখে কথা বলেন না উল্লেখ করে পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার বলেন, ‘প্রায় একটা কথা কানে আসে যে, আমি আর্জেন্টিনা দলে খেলোয়াড় বাছাই এবং কোচ কাটছাঁটে প্রভাবিত করি। আমি বললো এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। দল নির্বাচন কিংবা কোচ ঠিকঠাক করা সামগ্রিক কাজ, আমার একার নয়। দেখুন আমার কথা বাদই দিলাম, ডি মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরো, হিগুয়েন, মাচেরানো-যারা বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। এদের নিয়েও যাচ্ছেতাই মন্তব্য করা হচ্ছে।’

কয়েক দিন আগে ডি মারিয়া বলেছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট হাতে না পেলে আর্জেন্টিনা দল থেকে অনেকেই বিদায় বলে দিতেন। এমন প্রশ্নের জবাবে মেসি বলেন, ‘এটা অনুমান করা অসম্ভব। আমি অন্যদের কথা বলতে পারি না। বিশ্বকাপে খেলাটা আমাদের দরকার ছিল, আমরা এই অনুভূতি থেকে খেলেছি। বিশ্বকাপে যাওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।’

প্রসঙ্গত, ১৪ জুন থেকে ১৫ জুলাই রাশিয়ায় বসছে ফিফা বিশ্বকাপের ২১তম আসর হবে। ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপে অনুষ্ঠিত হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেবে ৩২টি দল। ইতোমধ্যে ২৩টি দল নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপ যাত্রা। বাকি কোন ৯টি দল রাশিয়ার টিকিট পাবে, সেটাও নির্ধারিত হয়ে যাবে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে। এরপর ১ ডিসেম্বর হবে বিশ্বকাপের ড্র। রাশিয়ার ১১টি শহরের ১২টি স্টেডিয়ামে মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ জুলাই মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শিরোপা ফয়সালার মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্বকাপের টান টান উত্তেজনা।