রাস্তায় সন্তান প্রসব : কাঠগড়ায় তিন হাসপাতাল

তীব্র প্রবস বেদনা নিয়ে রাতের বেলা সরকারি তিন হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী। তবুও, বাঁচানো যায়নি সন্তানকে। জন্ম দেয়ার পরে কতবার আকুতি জানিয়েছিলেন স্নেহের নারি ছেঁড়া ধনকে দেখার জন্য। মাকে দেখানোর আগেই মৃত্যু হয় সন্তানের।

সেই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এসেছে। এটি আমাদের মতো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সভ্যতার ওপর কালিমা লেপন। আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় গরিব জনগোষ্ঠী অত্যন্ত নিগৃহীত। তাদের চিকিৎসার অবহেলার এই দৃষ্টান্ত, সম্মুখ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের আরও সচেতন হওয়া আবশ্যক বলে মনে করেন আদালত।

রাস্তায় সন্তান প্রসব করার কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল নবজাতকের। ওই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন নজরে এলে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন। আদালত ঘটনা তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে রুলও দিয়েছেন।

হাসপাতালে যাওয়ার পরও ওই নারীকে তার প্রাপ্য চিকিৎসা সেবা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় এবং দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা কেন হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

৫ নভেম্বর পরবর্তী আদেশের দিন রেখে স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সমাজকল্যাণ সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পরিচালক, আজিমপুর মাতৃসদনের সুপারিন্টেন্ডেন্টকে এ রুলের জবাব দিতে বলেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর রাতে প্রসব বেদনা নিয়ে তিনটি সরকারি হাসপাতাল ঘোরেন পারভিন নামের এক নারী। তিনটি জায়গার কোনোটিতে স্বাস্থ্যসেবা পাননি তিনি। পরে রাস্তার ওপরই তার সন্তান প্রসব হয়। তবে জন্মের পরপরই শিশুসন্তানটি মারা যায়।