রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওবায়দুল কাদের

মিয়ানমার সরকার নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের যতদিন ফিরিয়ে নিবে না ততদিন সরকার তাদের পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উখিয়ার বালুখালীতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণকালে এসব কথা বলেন। সকালে টেকনাফে ত্রাণ বিতরণে অংশ নেন সেতুমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। ত্রাণ বিতরণের এক পর্যায়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওবায়দুল কাদের। সোমবার দিবাগত রাত থেকে অবিরাম বর্ষণে রোহিঙ্গাদের দুর্গতি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

যার যা আছে তা নিয়ে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিদের্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগায়োগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য এই হোক আমাদের স্নোগান। এ স্নোগানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গার পাশে থাকবে আওয়ামী লীগ। পাশে থাকবে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিভিন্ন সরকার প্রধানের সঙ্গে কথা বলছেন। আশা রাখছি নেত্রী এ বিষয়ে সফল হবেন।

আমরা ৭১ ‘এ পেরেছি, এবারও পারব।

তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফের হোয়াইক্যং উনছিপ্রাং স্টেশনে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কালে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়েছে হাজারো নারী ও শিশু, হত্যা নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাচাঁতে এখানে চলে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদেরকে মানবতার স্বার্থে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। যার যা আছে তাই নিয়ে এদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে হবে। যতদিন না এসব আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা একটি নির্দিষ্ট ক্যাম্পে অবস্থান নিশ্চিত না হয়।

তিনি আরো বলেন, গতকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এখানে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিশু মায়ের বুকে মুখ গোজে ভিজেছে। কি নিদারুণ কষ্ট। অনেকে শিশু ইতিমধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। অসুস্থ হয়ে এসব শিশুদের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠার আশংকা দেখা দিয়েছে। এসব অসুস্থদের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদেরকে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করতে হবে। অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্যোগ, প্রতিকূলতায় সরকার জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে বলেই দেশের জনগণ এখনো সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে। বেশ কয়েকটি বড় দুর্যোগ কাটানোর পর রোহিঙ্গা ইস্যু সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি ত্রাণ সহায়তা দিয়ে তাদের মুখে অন্ন-বস্ত্র তুলে দিয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেললে ক্ষমা করা হবে না। আমার দলীয় লোকদের কোন অভিযোগ যেন না শুনি। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করার আহবান জানান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ত্রাণ বিতরণকালে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সাইমুম সরোয়ার কমল, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী কানিজ মোস্তাক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইনসহ ত্রাণ তদারকির দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।