রোগীকে তাড়িয়ে দিল নার্স, হাসপাতালের আঙিনায় সন্তানপ্রসব!

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি রোগীকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছায়া চৌধুরী নামে এক নার্সের বিরুদ্ধে। পরে হাসপাতালের আঙিনায় সন্তানপ্রসব করেন গৃহবধূ মরিয়ম বেগম।

মরিয়ম উপজেলার পুটিবিলা গৌড়স্থান এলাকার দিনমজুর মহররম মিয়ার স্ত্রী। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রোগীর স্বজনরা জানান, অন্তঃসত্ত্বা মরিয়ম বেগম প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন রোগীর প্রাথমিক অবস্থা দেখে হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে পাঠান।

মরিয়ম বেগমের স্বজনরা তাকে নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে নিয়ে গেলে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার শুরু করেন। একপর্যায়ে এখান বের হও বলে জোর করে রোগী ও তার স্বজনদের বের করে দেন ওই নার্স।

মরিয়ম বেগমের শাশুড়ি আবিয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, নার্স ছায়াকে অনেক অনুনয়-বিনয় করতেছিলাম, এমনকি তার পায়ে ধরার বাকি ছিল। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথাই শুনতে চাননি। বের হও বলে জোর করে হাসপাতাল থেকে আমাদের বের করে দেন।

এদিকে বাধ্য হয়ে হাসপাতাল থেকে বের হতে গেলে হাসপাতালের সামনে আঙিনায় সন্তানপ্রসব করে ফেলে মরিয়ম বেগম। প্রসবের একটু পরেই বাচ্চাটি মুত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

খবর পেয়ে ওই এলাকার চেয়ারম্যান জহির উদ্দীন দ্রুত হাসপাতালে যান। রোগীকে উপজেলা সদরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এ সময় রোগীর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

এ অভিযোগের বিষয়ে নার্স ছায়া চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মরিয়ম বেগমের প্রচণ্ড ব্যথা উঠার কারণে ডাক্তার তার কাছে পাঠিয়েছিলেন। এমন পেইন উঠলে নরমাল ডেলিভারি হয় ঠিকই কিন্তু প্রসূতি মায়ের ডান পা বের হয়ে যাওয়াতে রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছি।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হানিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি সত্য। বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।