রোনালদোকে ইকার্দির স্ত্রীর খোঁচা

ক্যারিয়ারজুড়ে নিন্দুকদের খোঁচা-টিপ্পনী কম হজম করতে হয়নি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে। তবে জুভেন্টাসের পর্তুগিজ সুপারস্টারের হৃদয়ে এবারের টিপ্পনীটা একটু বেশিই আচড় কাটার কথা। এবারের খোঁচাটা যে মেরেছেন একজন নারী। প্রতিদ্বন্দ্বী এক ফুটবলারের স্ত্রী! না, লিওনেল মেসির স্ত্রী আন্তেনেল্লা রোকুজ্জো নয়। রোনালদোকে খোঁচাটা মেরেছেন মেসিরই স্বদেশি মাউরো ইকার্দির স্ত্রী ওয়ান্ডা নারা।

তিনি শুধু সহধর্মিণী নন, ইকার্দির এজেন্টও। ইকার্দির দলবদলের বিষয়টা দেখাশোনা করেন তিনিই। তা হঠাৎ ইকার্দির স্ত্রী রোনালদোর দিকে তীর ছোঁড়ার কারণ? কে ভালো, সেই তুলনা প্রসঙ্গে। ফুটবলবোদ্ধারা একমাত্র মেসির সঙ্গেই রোনালদোর তুলনাটা করে আসছেন বছরের পর বছর ধরে। রোনালদো নিজেও সেই তুলনায় অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।

কিন্তু সেই ধারা থেকে সরে এসে ওয়ান্ডা এবার রোনালদোর তুলনাটা করে বসলেন তারই স্বামীর সঙ্গে! এমনকি ওয়ান্ডা নারা কথার মারপ্যাচে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এই মুহূর্তে বরং তার স্বামীই রোনালদোর চেয়ে এগিয়ে!

রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে এই মৌসুমেই জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন রোনালদো। নতুন দেশ, নতুন লিগ, নতুন ক্লাব, নতুন সব সতীর্থ, প্রতিদ্বন্দ্বী-সবকিছুর মানিয়ে নিতে গিয়ে রোনালদো ঠিক নিজের ছন্দে নেই। ইতালিয়ান সিরি আ’তে ১১ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৭ গোল। ইকার্দি অবশ্য লিগে তার চেয়েও এক গোল কম করেছেন। কিন্তু ওয়ান্ডা নারা স্বামীর পক্ষেই ঢোল বাজালেন। কেন লিগে তার স্বামী রোনালদোর চেয়ে এক গোল কম করেছেন, সেটাও ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন তিনি।

রোনালদো জুভেন্টাসের হয়ে লিগে ১১ ম্যাচেই মাঠে নেমেছেন। সেখানে ইকার্দি চোটের কারণে ৩ ম্যাচ খেলতে পারেননি। ৮ ম্যাচেই করেছেন ৬ গোল। তার নারার কথা, ১১ ম্যাচ খেললে তার স্বামীর গোলই বেশি হতো। সব প্রতিযোগিতা ম্যাচ মিলিয়ে যেমন গোল সংখ্যায় এগিয়ে ইকার্দিই।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইকার্দি ১২ ম্যাচে করেছেন ৯ গোল। রোনালদো ১৩ ম্যাচে ৭টি। ‘টিটি-টাকা’ প্রোগ্রামকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই যুক্তিই তুলে ধরে নারা বলেছেন, ‘লিগে ৩টি ম্যাচ কম খেলেও সে প্রায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সমান গোল করেছে!’ এরপরই মেরেছেন আসল খোঁচাটা, ‘আমি খুব খুশি হব এটা দেখে যে, তার দল ৫ গোলে জিতেছে। অথচ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো শান্তভাবে রিজার্ভবেঞ্চে বসে আছেন! কারণ, সে জানত দলের সেই ৫ গোলের ৩টিই হতে পারত তার। জেনোয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ইকার্দির ক্ষেত্রে যা ঘটেছে।’

এই খোঁচার মাহাত্ম্যটা বুঝতে একটু গভীরে যেতে হবে। গত ৩ নভেম্বর জেনোয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জিতেছে ইন্টার মিলান। কিন্তু চোটের কারণে ওই ম্যাচে খেলতে পারেননি ইকার্দি। নারারিইঙ্গিত, ওই ম্যাচ খেলতে পারলে ইকার্দি অন্তত ৩ গোল করতে পারতেন! মাঠের বাইরে বসে থাকাটা এমনিতেই কষ্টের। আর সেই বসে থাকাটা যদি হয় দলের গোল-উৎসবের ম্যাচে, আফসোস-কষ্টেও শান্ত থেকেছেন ইকার্দি। রোনালদো শান্ত থাকতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার আগ্রহ ওয়ান্ডা নারার।

আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে লিওনেল মেসির সঙ্গে ইকার্দির একটা দ্বন্দ্ব আছে বলেই গুঞ্জন আছে। কিন্তু ওয়ান্ডা নারা উড়িয়ে দিলেন সেই গুঞ্জন। বললেন, মেসির সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্কটা খুবই ভালো।