রোবট যখন অফিস কর্মী!

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় দৈনন্দিন জীবন আরও গতিময় হয়েছে। মানুষের পাশাপাশি এখন কর্মক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট তথা আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই)

এমনকি মানুষের সঙ্গে অফিস কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছে এ রোবট। কাজ কর্মে নিখুঁত হওয়ায় সবখানেই বাড়ছে তাদের অংশগ্রহণ। ভবিষ্যতে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা মেশিন লার্নিংয়ের সাহায্যেই অফিসের সব কাজ কর্ম চালানো হবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কায় আছেন।

তবে ইতোমধ্যে বিশ্বের বেশ কিছু কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা মেশিন লার্নিংকে কাজে লাগিয়ে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে এনেছে। অফিসে বিভিন্ন রকম এআই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের ফিচার।

কাস্টমার সার্ভিসে সেবা নিতে আসা বেশিভাগ গ্রাহকই মানুষের কণ্ঠ শুনতে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে কর্মীদের পাশাপাশি এআইয়ের সমন্বয় ঘটিয়েছে ডিজিটাল জিনিয়াস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। হাজার হাজার কাস্টমার কেয়ার অফিসারের দৈনন্দিন কাজ পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করেই এআইটি গ্রাহক সেবা দিচ্ছে। কিওয়ার্ড খোঁজা, গুরুত্ব বুঝে কাজ করা এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উত্তর দেওয়ার কাজ করছে এটি

এনটেকল্যাব নামে এক প্রতিষ্ঠানের তৈরি ফেইস আইডি সিকিউরিটি সিস্টেম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজের সহায়তায় ব্যবহৃত হচ্ছে। নিরাপত্তা পণ্য ফাইন্ড ফেইস প্রো তৈরি করা হয়েছে নিউরাল নেটওয়ার্ক ও অ্যালগরিদমের মাধ্যমে। চাকরি প্রার্থী ও চাকরিদাতা উভয় পক্ষেরই সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছে এমইয়া নামে একটি এআই। সিভি বাছাই করা, বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা করবে এটি। শুধু তাই নয়, এআইটি চাকরি প্রার্থীর অভিজ্ঞতা, বেতন ও কাজের সময় নিয়ে প্রশ্ন করবে। এর বিপরীতে চাকরি প্রার্থীরাও কোম্পানির নানা বিষয়ে নিয়ে এআইটিকে প্রশ্ন করতে পারবেন।

ইতোমধ্যে ৫০০ কোম্পানি কর্মী নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমইয়া ব্যবহার করা শুরু করেছে। ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা এক্স আই মূলত মিটিং সময় ও জায়গা নির্ধারণ করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ই-মেইলে কেউ মিটিংয়ের সময় ও জায়গা পূর্ব নির্ধারণ করে দিলে তা আমলে নিয়েই ই-মেইলের জবাব দেবে এক্স আই। অফিসের কাজের চাপ কমানোর জন্য সহায়তা করে চলেছে এআই হাইপারসাইন্স।

বিশাল বিশাল ডকুমেন্ট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুঁজে বের করা, আবেদনপত্র দেখে দেওয়া এবং পূর্বের তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ করছে হাইপারসাইন্স এআই। তথ্য বহুল স্প্রেডশিট থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা খুঁজে বের করে কাজের পরিধি কমিয়ে আনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অটোমেটেড ইনসাইট নামে একটি এআই।

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন ক্ষমতা ও আয় বাড়াতে সাহায্য করছে এআই ইনফার। ভবিষ্যতের জন্য ব্যবসায়ীক মডেল তৈরি করে সম্ভাব্য পরিবর্তনের ব্যাপারে আভাসও দেবে এটি। ডাটা সাইন্টিস্টদেরকে সহায়তা করার কাজে স্কাই ট্রি নামে এক এআই ব্যবহৃত হচ্ছে। এআইটি তথ্য বিবরণী ও অ্যালগরিদমের ওপরে ভিত্তি করে প্রকল্প তৈরিতে সহায়তা করে থাকে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবে ভাইভ নামে একটি এআই। সর্বসাধারণের জন্য এটি এখনও উন্মোচন করা হয়নি। সিরির নির্মাতারাই এটি তৈরি করছেন। এআইটি কম্পিউটার বা ফোনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করাই হবে ভাইভের প্রধানতম কাজ।