রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে আগ্রহী শ্রীলংকার এক শহর

শ্রীলংকায় উগ্রপন্থী বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের হামলার শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটির উত্তরপ্রদেশ।

প্রাদেশিক পরিষদের চেয়ারম্যান সিভিকে সিভাঙ্গানাম এবং প্রাদেশিক পরিষদের এক সদস্য এমভি শিভজিলিঙ্গাম এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

সেখানকার উত্তরাঞ্চলে ৩১ রোহিঙ্গার ওপর চরমপন্থী হামলার তীব্র নিন্দাও জানান তারা। সাউথ এশিয়ান মনিটর এ খবর দিয়েছে।

শ্রীলংকার সংবিধান অনুযায়ী, প্রাদেশিক পরিষদের হাতে নিজেদের এলাকায় শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর কোনো আইনি ক্ষমতা নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই সবকিছু নির্ভর করে। শিভজিলিঙ্গাম পরামর্শ দেন যে শ্রীলংকার দক্ষিণে সিংহলী-বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাবের কারণে সরকারের উচিত হবে তামিল-সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তরপ্রদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। পরিষদের পক্ষ থেকেও তার পরামর্শের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। সিভাঙ্গানাম বলেন, ‘শরণার্থীদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করা না গেলে আমরা তাদের এখানে রেখে দিতে রাজি আছি।

তবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রের অধিকার।’ শ্রীলংকার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর চরমপন্থী বৌদ্ধদের হামলার সময় যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার জন্য পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, ইউএনএইচআরসির আওতায় থাকার পরও বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত না করার দায়ে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

সিংহলী-বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে চরমপন্থী জাতীয়তাবাদের সৃষ্ট বৈষম্যের শিকার হওয়ার কারণে শ্রীলংকার সংখ্যালঘুরা বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়ি?ত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। শ্রীলংকার জনসংখ্যার ১০% মুসলিম ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তারা একাত্মতা বোধ করে। এদিকে সেখানকার তামিলদের অধিকাংশই হিন্দু হলেও তারাও রোহিঙ্গাদেরকে নিজেদের মতো সংখ্যালঘু বিবেচনা করে। স্বাধীনতাকামী তামিল টাইগারদের সশস্ত্র আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া ত্রিশ বছরের গৃহযুদ্ধে অনেক বৈষম্যের স্বীকার হয়েছে তামিল জনগণ। শ্রীলংকার তামিল জনগোষ্ঠীর মানুষের নিপীড়নের অভিজ্ঞতা রোহিঙ্গাদের বিপন্নতা বুঝতে সহায়ক হয়েছে।