রোহিঙ্গাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ব্যথিত হতে দেখছি না : রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যথিত হতে দেখা যাচ্ছে না।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে রিজভী এই মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মুসলমানদের কোনো মানবাধিকার থাকতে নেই—অনেকদিন আগেই আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন এবং লিখেছেন। আজ প্রতিক্ষণে তা সত্যে পরিণত হচ্ছে । অং সান সু চি শান্তির জন্য নোবেল পেলেন। কিন্তু আজকে তাঁর নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের ফাঁসি দিচ্ছে, নারী ও শিশুর হাত বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারছে, গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে, নিরীহ যুবকদের গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা করছে। কী বীভৎস ! কী পৈশাচিক!’

‘আজ অং সান সু চি সামরিক বাহিনীর পকেটে ঢুকে গেছেন। এ ধরনের লোক যখন বিপদে থাকে, তখন চুপচাপ থাকে, যখন ক্ষমতায় আসে, রূপ বদলায় । মানবতাবাদে যারা উদ্বুদ্ধ তাঁরাও বলছেন তাঁর (সু চি) নোবেল প্রাইজ সার্টিফিকেট ছিড়ে ফেলা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাঙালিত্ব, বাঙালিত্ব করে আকুল হয়ে যান। আজকে রোহিঙ্গাদের উগ্র বাঙালি বলা হচ্ছে। মুসলমানদের কথা বাদ দিলাম, বাঙালি বলে যখন তাদের ওপর অত্যাচার করছে। তার পরও প্রধানমন্ত্রীর কোনো ধরনের হৃদয়ের মধ্যে কোনো ব্যথিত হওয়ার অনুভূতি দেখেছি বলে মনে হয় না । বিস্মিত মনে হচ্ছে । নাফ নদীতে ভাসছে লাশ, রক্তাক্ত লাশের সারি নাফ নদীর তীরে।’

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘আজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো উত্তর নেই। যেখানে আমাদের দেশ আক্রান্ত হচ্ছে, আমাদের সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারের সেনা টহল দিচ্ছে, তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন আমরা কী যুদ্ধ করব ?’

‘যুদ্ধ কেন করবেন? আপনি চীনে যান, ভারতে যান, কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করুন। বার্মারা আমাদের চট্টগ্রাম দখল করেছিল একবার। শায়েস্তা খানের সেনাপতি তা পুনরুদ্ধার করেছিল। আমরা কারো রক্তচক্ষু ভয় করি না। আপনারা তা করতে পারেন। আপনারা তো দেশের বাইরের শক্তি নিয়ে ক্ষমতায় আছেন। দেশের মানুষ হত্যা করতে পারেন আর বাইরের লোকেরা কিছু করলে কিছুই করতে পারেন না।’

রোহিঙ্গাদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন ‘রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা জোরদার করুন, আশ্রয়, খাদ্য, অনুদান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। দ্রুত কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।’