রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ বলা মুশকিল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। সাংবাদিকরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ জানতে চাইলে “তারিখ বলা মুশকিল” মন্তব্য করে তিনি বলেন: অ্যারেঞ্জমেন্ট, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং ভৌত অবকাঠামোর পর এখন পরিবার ভিত্তিক যাচাই ফর্মপূরণের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর কাজ চলছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকে ব্রিফিংয়ে এসে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশকে চাপ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রাখাইনে ফেরত যেতে রোহিঙ্গাদের চরম উদ্বেগের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। তবে বাংলাদেশের উপর বাড়তি চাপ দ্রুত কমাতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

রোববার বিকেলে এবং সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাষ্ট্র,ভারতসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আজকের ব্রিফিং এবং প্রত্যাবাসনের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন পরিবার ভিত্তিক ভেরিফিকেশন ফর্ম পূরণ করা শুরু হয়েছে। পরিবারের প্রধান এই ফর্মে তার পরিবারের সদস্যদের নাম-তথ্যাদি লিখবেন। প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে ইউএনএইচসিআর এর সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। মিয়ানমারও শীঘ্রই এটা করবে।

তিনি আরও বলেন: ভারত,চীন, জাপান রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে। এব্যাপারে মিয়ানমারও রাজি হয়েছে।

এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন: আমরা বিশ্বাস করি রাখাইনে টেশসই উন্নয়ন সেখানে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। এই দৃষ্টিকোণ কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে একটি ‘রাখাইন এস্টেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ নামে প্রকল্পে সম্মত হয়েছে। এর মাধ্যমে রাখাইনে জীবনধারণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিশ্চিত হবে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে হলে রাখাইন রাজ্যে টেশসই উন্নয়ন করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন: আমরা বিশ্বাস করি যতো দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় আন্তজার্তিক সম্প্রদায়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সেখানে পরিস্থিতি এবং এদিকে বাংলাদেশের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। প্রত্যাবাসনের জন্য উপযোগী পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ভারত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দু’পক্ষের সঙ্গেই কাজ করছে।

রোহিঙ্গাদের উদ্বেগ তুলে ধরে বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশ সরকার একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সেভাবেই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। যুক্তরাষ্ট্ররের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা হবে। বাংলাদেশেও উচিৎ মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। এটাকে আমরা স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, আমি কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে যেটা জানতে পেরেছি তারা ওই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আর ফিরে যেতে চায় না। তাই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হলে রাখাইনে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা প্রয়োজন। আমরা সেটার ওপরই জোর দিচ্ছি।