রোহিঙ্গা সহায়তায় ৮৪ মিলিয়ন ডলার চায় ইউএনএইচসিআর

জাতিসংঘ শরণার্থীসংক্রান্ত সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া পাঁচ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিকের সহায়তায় আগামী ছয় মাসের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮৩.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত তহবিল চেয়েছে।

রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা, আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা এবং স্থানীয় আশ্রয়দাতাদের সক্ষমতা বাড়াতে এই জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।

সর্বশেষ হিসাবে অনুযায়ী চলতি সপ্তাহের অব্যাহত আগমনসহ গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার।

ইউএনএইচসিআর-এর স্পোকসপার্সন এন্ড্রেজ মেহকিক স্থানীয় সময় শুক্রবার জেনেভায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

এন্ড্রেজ মেহকিক বলেন, কক্সবাজারের কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে সর্বশেষ সংকটের শুরুর আগে যে পরিমাণ লোক ছিল এখন সেখানে তার দ্বিগুণ লোক- প্রতিদিন রোহিঙ্গাদের আগমন বাড়ছে। এই নাটকীয় লোকবৃদ্ধি থেকে নিষ্কৃতি লাভও একটি অগ্রাধিকারের বিষয়।

নতুনভাবে আগত লোকদের মধ্যে বিরাট সংখ্যায় শিশু রয়েছে, যাদের অনেকেই সঙ্গীহীন অথবা তারা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। এই আগতদের অর্ধেকের বেশি নানা বয়সের শিশু ও নারী। এবার আগত রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক বৃদ্ধ ও পঙ্গু মানুষও রয়েছে। চরম সহিংসতা, নির্যাতন ও ধর্ষণের কারণেই বিপুলসংখ্যক মানুষ অসুস্থ এবং দৈহিক ও মানসিকভাবে আহত। অনেকে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব হারিয়েছে।

মেহকিক আরও বলেন, বর্তমান সংকটের আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত তিন লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুনভাবে আগতরা।

ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে (কক্সবাজারে) রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা, আশ্রয় ও স্যানিটেশন কাজের বাইরে এই জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাটি এ পর্যন্ত পাঁচটি বিমানে করে পাঁচশ’ মেট্রিক টন সাহায্য পাঠিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সংস্থাটির কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে একশ’ করা হবে এবং আরও সাহায্য পাঠানো হবে।

গত ২৫ আগস্ট একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার জের ধরে রাখাইনে ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। নিপীড়নের মুখে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। ইতোমধ্যে পাঁচ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় এসে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো রোহিঙ্গা স্রোত অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।