রোহিঙ্গা স্রোতের সঙ্গে থাকবে তিস্তার পানিও : সুষমা স্বরাজ

চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যে সমাধানের পথ খুঁজতে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তার সফরে তিস্তার পানি বন্টনের ব্যাপারেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ যৌথ পরামর্শদাতা কমিশনের (জেসিসি) চতুর্থ বৈঠক হতে চলেছে ঢাকায়। ওই বৈঠকে অংশ নিতে আগামী ২৩ ও ২৪ অক্টোবর ঢাকা সফর করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি গত সোমবার সুষমা স্বরাজের সফরের বিষয়টি জানান।

বহুল প্রতীক্ষিত পানি বন্টনের ব্যাপারে হাইকমিশনার জানান, ভারত-বাংলাদেশের পানি বন্টনের বিষয়টি এখন ভারতের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে।

তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তিনি বলেন, নদীটি এখন একেবারেই স্পর্শকাতর ইস্যু এবং সব হিসাব-নিকাশের পর যে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত। সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরে আসার সময়ই তিস্তা চুক্তি আশা করা হচ্ছিল। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাধার মুখে চুক্তিটি ভেস্তে যায়।

সুষমা স্বরাজের এজেন্ডার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম অন্যতম। বাংলাদেশও অনেকটাই স্বরাজের পথে হেঁটে তাকে সাহায্য করছে।

তার সফরে জ্বালানি, বাণিজ্য ও উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যাপারেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত সফর করেন। সে সময় তিস্তা চুক্তির আশা করা হলেও শেষাবধি তা হয়ে ওঠেনি। বর্তমানে মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে চরম সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে চরম মানবিক সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, গত ৬০ বছরে মিয়ানমার সরকার এই সঙ্কট বুঝে উঠতে সক্ষম হয়নি। মিয়ানমারে সরকারকেই এই সমস্যা সমাধান করতে হবে। এটা আমাদের সবারই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ।

রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার ঢল থামাতে মিয়ানমার সরকারকে পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সেগুলোর মধ্যে কিছু সুপারিশ জাতিসংঘের; রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের ব্যাপারে তদন্তের ভিত্তিতে ওই সুপারিশগুলো করেছে জাতিসংঘ।

২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার অযুহাতে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জীবন বাঁচাতে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনাকে পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত গণহত্যার উদাহরণের সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ।

সূত্র : বিজনেস লাইন