লুইসের ব্যাটে বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা

রংপুর রাইডার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে বিপিএল ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে উঠে গেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের হয়ে ৫৩ বলে ৭১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন কুমিল্লার ক্যারিবীয় ওপেনার ইভিন লুইস। এছাড়া ৩৯ রান করেন এনামুল হক বিজয়। ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন শামসুর রহমান শুভ।

তবে এই পরাজয়ের পরও আরেকটি সুযোগ থাকল মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন রংপুর রাইডার্সের সামনে। আগামী বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুখোমুখি হবে রংপুর ও ঢাকা ডায়নামাইটস। সেই ম্যাচে যারা জিতবে তারা শুক্রবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে।

জিতলেই সরাসরি ফাইনালে। এমন সমীকরণের ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। দলের হয়ে ২৮ বলে পাঁচটি ছয় এবং তিনটি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন বেনি হাওয়েল। এছাড়া ৪৬ ও ৪৪ রান করেন ক্রিস গেইল ও রাইলি রশো। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিল্লা।

সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৭ রানেই ওপেনার মেহেদি মারুফের উইকেট হারায় রংপুর। এরপর ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন।

ক্রিকেটীয় নিয়মে এক বলে দুই ব্যাটসম্যানের আউটের বিধান নেই। থাকলে তাই হত! সঞ্জিত সাহার এক বলেই রান আউট হন রংপুর রাইডার্সের দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন ও ক্রিস গেইল।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে সঞ্জিতের শর্ট অপ লেন্থ বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নেয়ার চেষ্টা করেন রংপুরের দুই ব্যাটসম্যান গেইল ও মিঠুন। উইকেটের মাঝ পথে গিয়ে দু’জনই ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান নেবেন কি নেবেন না এটা ভেবে থেমে যান। আবার দৌড় শুরু করেন।

ভুল বোঝাবুঝির কারণে প্রথমে রান আউট হন মিঠুন। তাৎক্ষণিক আউট নিশ্চিত না হতে পেরে অপর প্রান্তে বল থ্রো করেন উইকেটকিপার এনামুল হক বিজয়। ঐ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা তামিম ইকবাল স্টাম্প ভেঙ্গে দেন। রিভিউতে দেখা যায় দুই প্রান্তেই মিঠুন এবং গেইল আউট হন। কিন্তু রীতি অনুযায়ী এক বলে একজনের আউটের রেওয়াজ থাকায় প্রথমে আউট হওয়া মিঠুনই সাজঘরে ফেরেন।

এদিন দুইবার লাইফ পেয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি ক্রিস গেইল। ব্যক্তিগত ২৯ রানে সঞ্জিত সাহার বলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট থেকে বাঁচেন। ১০ম ওভারে আবারও সঞ্জিত সাহার বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন গেইল।

মেহেদী হাসানের কল্যাণে ৪৬ রানে দ্বিতীয় দফায় লাইফ পান। দুইবার লাইফ পেয়েও নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। এরপর আর কোনো রান যোগ করার আগেই ক্যাচ ছেড়ে দেয়া মেহেদীর বলে আউট হন গেইল। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৪ বলে ছয়টি চার ও এক ছক্কায় ৪৬ রান করেন রংপুরের এই তারকা ব্যাটসম্যান।

পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩ রানে ফেরেন রবি বোপারা। পঞ্চম উইকেটে বেনি হাওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়েন রাইলি রুশো। ইনিংস শেষ হওয়ার ৭ বল আগে ক্যাচ তুলে ফেরেন রুশো। তার আগে ৩১ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৪ রান করেন। শেষ বল পর্যন্ত খেলে যাওয়া বেনি হাওয়েলের ২৮ বলের অপরাজিত ৫৩ রানে ভর করে ১৬৫ রান তুলতে সক্ষম হয় রংপুর রাইডার্স।

১৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলীয় ৩৫ রানে ফেরেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।

এরপর তিনে ব্যাটিংয়ে নামা এনামুল হক বিজয়কে সঙ্গে নিয়ে ৯০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান ইভিন লুইস। দলীয় ১২৫ রানে শফিউল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। তার আগে ৩২ বলে দুই চার ও সমান ছক্কায় ৩৯ রান করেন বিজয়।

ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন শামসুর রহমান শুভ। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে যাওয়া ইভিন লুইস ৫৩ বলে তিন ছয় ও পাঁচটি চারের সাহায্যে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (হাওয়েল ৫৩*, গেইল ৪৬, রুশো ৪৪)।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৮.৫ ওভারে ১৬৬/২ (এভিন লুইস ৭১*,এনামুল হক ৩৯, শামসুর রহমান ৩৪*)।

ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী।