শহীদ স্মরণে সারাদেশে একযোগে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ

পরিবেশ সংরক্ষণ, সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ- দুই উদ্দেশ্য একসঙ্গে বাস্তবায়নে উদ্যোগী সরকার। যু্দ্ধে নিহত ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে সারদেশে একযোগে রোপন করা হলো ৩০ লাখ গাছের চারা।

কেন্দ্রীয়ভাবে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ছাতিম গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও বৃক্ষমেলা এবং বৃক্ষ রোপন অভিযান উপলক্ষে এই আয়োজন করে সরকার। গত তিন বছর ধরেই এক দিনে এই ৩০ লাখ গাছ রোপনের অভিযান করছে সরকার।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যাপকভাবে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান। বলেন, সরকারও এই কাজ করে যাচ্ছে। আর সামাজিক বনায়নের মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপন অভিযান চালানো হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সামাজিক বনায়নে উপকারভোগীদের মধ্যে টাকার চেক বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। একজন সর্বোচ্চ ১০ লাখের বেশি টাকা পেয়েছেন। বাকিরাও পাঁচ থেকে সাত লাখের মধ্যে নানা অংকের টাকা পেয়েছেন। রাস্তার পাশে বা সরকারি জমি বা নিজের জমিতে গাছ রোপন আর রক্ষণাবেক্ষণ করে এই অর্থ পেয়েছেন তারা অংশীদার হিসেবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩৭১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মোট উপকারভোগী ছয় লাখের বেশি যাদের মধ্যে এক লাখ ২১ হাজারের বেশি নারী।

সামাজিক বনায়ন পরিবেশ রক্ষায় যেমন অবদান রাখে, তেমনি উপকারভোগীদের আর্থিক অবস্থাও পাল্টে দেয় উল্লেখ করে আরও বেশি মানুষকে এই কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রধান জানান, বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ এক সময় সাত থেকে নয় শতাংশে নেমে আসলেও এখন বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা ২২ শতাংশ। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ শতাংশের।

নতুন নতুন চর জাগছে, এগুলোতেও যেন ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপন হয় এবং উপকূলীয় এলাকায় যেন সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি হয়, তার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

সুন্দরবনের জন্য পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বন রক্ষার জন্য যা যা দরকার করছি। সাগরে চর জাগছে, সুন্দরবন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

‘যারা সুন্দরবনে কাজ করছে, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। অনেক জলদস্যু আমাদের কাছে সারেন্ডার করছে, তাদেরকে নগদ টাকা দিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’

প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার আর সম্ভব হলে প্লাস্টিক বর্জন, পলিথিন ব্যাগের বদলে পাটের পলিথিন ব্যবহারের তাগাদাও দেন প্রধানমন্ত্রী।