শাকিব-অপুকে মেলানোর সব চেষ্টাই ব্যর্থ হলো

শেষ পর্যন্ত সব রাস্তা ও সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হলো। সোমবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৩-এ ডাকা তৃতীয় ও শেষ সালিশি বৈঠকেও উপস্থিত হননি বাংলা চলচ্চিত্রের আলোচিত জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন। ফলে আজই চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে গেল যে, স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আর কোনোদিনই এক ছাদের নিচে থাকা হবে না শাকিব-অপুর।

তবে এই তালাক নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ডিএনসিসির নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘অপু বিশ্বাস দাবি করেছেন তালাকের আবেদনে যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি শাকিবের নয়। স্বাক্ষরটি শাকিবের কী না সেই ব্যাপারে আমরাও নিশ্চিত হতে পারিনি। শাকিব ও তার উকিলকে বেশ কয়েকবার তলব করেও এই ব্যাপারে কোনো সদুত্তর মেলেনি। তাই অপু যদি চ্যালেঞ্জ করেন এবং স্বাক্ষরটি শাকিবের নয় বলে প্রমাণ হয়, তবে ডিভোর্সের আবেদনটিই বাতিল হয়ে যাবে। তাছাড়া একটি ডিভোর্স কার্যকর করার জন্য যেসব তথ্য ও প্রমাণ দরকার তার অনেক কিছুই শাকিব খান প্রদান করেননি।’

গত ২২ ফেব্রুয়ারি নায়ক শাকিব কর্তৃক স্ত্রী অপুকে তালাকের নোটিশ পাঠানোর ৯০ দিন পূর্ণ হয়। আইনগতভাবে ওইদিনই তারকা এ জুটির তালাক কার্যকর হয়। ওই দিনের পর থেকে তারা আর স্বামী-স্ত্রী নন। তারপরও আলোচিত দুই তারকাকে নিয়ে ১২ মার্চ তৃতীয় ও শেষ শুনানির তারিখ জানিয়েছিলেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন। সোমবার ছিল সেই দিন।

যদিও শাকিব খান আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃতীয় সালিশি বৈঠকেও তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এমনকী অপুর সঙ্গে সংসার করা একেবারেই অসম্ভব বলেও কদিন আগে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। এর আগের দুটি সালিশি বৈঠকেও শাকিব উপস্থিত ছিলেন না। দিনক্ষণ জানা সত্ত্বেও দুই বারই শুটিংয়ের কাজে দেশের বাইরে ছিলেন দেশসেরা এই তারকা।

অন্যদিকে, দুটি সালিশি বৈঠকের প্রথমটিতে উপস্থিত ছিলেন অপু বিশ্বাস। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সালিশি বৈঠকের সময় তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেন, শাকিবের দেয়া তালাকের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়েছেন। কাজেই, দ্বিতীয় সালিশি বৈঠকের কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরও তারকা এ জুটির সংসার টেকাতে শেষ চেষ্টা হিসেবে তৃতীয় ও শেষ শুনানির দিন ঠিক করে ডিএনসিসি। কিন্তু তাতে শাকিব বা অপু কেউই কোনো আগ্রহ দেখাননি। অনুপস্থিত ছিলেন দুজনই।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ নভেম্বর আইনজীবীর মাধ্যমে স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন শাকিব খান। ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই জুটি ২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করেছিলেন। দীর্ঘ নয় বছর পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে জন্ম হয় তাদের একমাত্র সন্তান আব্রাম খান জয়ের। গোপন রাখা হয় এই খবরটিও। অবশেষে গত বছরের ১০ এপ্রিল সাত মাসের ছেলেকে নিয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরের লাইভ অনুষ্ঠানে হাজির হন অপু বিশ্বাস। প্রকাশ করেন সবকিছু।

এ ঘটনায় শাকিব খান প্রথমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেও পরে সবকিছু স্বীকার করেন এবং অপুর সঙ্গে সুখে সংসার করবেন বলে জানান। কিন্তু সেই সুখের সংসার আর পাতা হয়নি। উপরে উপরে সবকিছু মেনে নিলেও ভেতরে যে একটা ক্ষোভ ছিল সেটা অবশেষে প্রকাশ করে দেন নায়ক। ‘ছেলে জয়কে তালাবদ্ধ করে অপু বয়ফ্রেন্ড নিয়ে কলকাতায় ঘুরতে গেছেন’- এমন অভিযোগ এনে গত ২২ নভেম্বর তালাকের নোটিশ পাঠান শাকিব।

যদিও পরে অপু ফিরে এসে শাকিবের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন যে, তিনি কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন এবং ছেলে জয়কে শাকিবের কোনো আত্মীয়ের কাছে রেখে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তাই কাজের মেয়ে শেলীর কাছে রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেসব কিছুই কানে তোলেননি শাকিব খান। নড়েননি নিজের সিদ্ধান্ত থেকেও। শেষ পর্যন্ত অটলই থাকলেন তিনি। অন্যদিকে, ডিভোর্স মেনে নিলেন অপুও।