শাহবাগে অবরোধ : তীব্র যানজট, রোগীদের ভোগান্তি

সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে বুধবার রাত থেকে আন্দোলন করছেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শাহবাগের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা। সড়ক বন্ধ থাকার ফলে শাহবাগের আশপাশের এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঝ সড়কে আন্দোলনকারীদের অবস্থানের ফলে এলিফ্যান্ট রোড থেকে মৎস্য ভবনগামী যানবাহনগুলো বামদিকে টার্ন নিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশের ভিআইপি সড়ক দিয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে দিয়ে চলাচল করছে। এর ফলে শাহবাগ থেকে কারওয়ান বাজার সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে তা তীব্র যানজটে রূপ নিয়েছে।

মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগগামী সড়ক বন্ধ থাকার কারণে মৎস্য ভবনের সামনে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এই যানজট প্রেসক্লাব-পল্টন হয়ে গুলিস্তানে গিয়ে ঠেকেছে। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেয়া হলেও বারডেম হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বের হওয়া রোগীদের বাড়ি ফিরতে ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে।

বারডেম হাসপাতাল থেকে বের হওয়া সৈয়দা তাহারুন বিবি নামে মোহাম্মদপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার স্বামীর বাম পায়ে সমস্যা। এক পায়ের ওপর ভর করে হাঁটে। ফেরার সময় কোনো রিকশা পেলাম না, হেঁটে হেঁটে যেতে হবে।’

সকালে অবশ্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান বলেছিলেন, ‘জনগণকে কষ্ট দিয়ে রাজপথ দখল করে তারা আন্দোলন করবেন না। এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করে আজ সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তারা সরে গিয়ে জাতীয় জাদুঘরের আশপাশে থাকবেন।’

তবে দুপুরে কমিটির বর্তমান সভাপতি শেখ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, তাদের লাগাতার অবস্থান চলবে। তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ থেকে সরবো না।’

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেয়। কমিটি নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা উঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করে। সেই প্রস্তাবটিই গতকাল অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

পরে গতকাল বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোটা থাকলেই শুধু আন্দোলন। তাই কোটার দরকার নেই। কোটা না থাকলে আন্দোলন নেই, সংস্কারও নেই। তিনি বলেন, যদি কেউ কোটা চায়, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবে-চিন্তে দেখা হবে কী করা যায়? আন্দোলন ছাড়া কোটা দেয়া হবে না।