‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে পুলিশের শিক্ষা হয়েছে’

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে পুলিশ জনগণকে সচেতন করার সুযোগ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবুর রহমান। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে পুলিশের শিক্ষা হয়েছে। তিনি বলেন, এ আন্দোলনকে পুঁজি করে সামনের দিকে চলবে পুলিশ।

সোমবার সকালে ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান এসব কথা বলেন। নগরীর দামপাড়া পুলিশের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা জনগনকে সচেতন করার সুযোগ পেয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটিকে ক্যাপিটালাইজ (সুযোগ কাজে লাগানো) করতে চাই। আমরা মনে করি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হয়েছে। আমরা এ আন্দোলনকে পুঁজি করে এগিয়ে যাব।’

সিএমপি কমিশনার বলেন, আইনভঙ্গের দায়ে প্রতি মাসে চার কোটি টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। তারপরও আইন ভাঙার প্রবণতা কমছে না। আইন না মানার সংস্কৃতি গড়ে উঠা। আইন না মেনে ঠিকে থাকার অভ্যাস গড়ে উঠার কারণে পুলিশ শতভাগ সফল হতে পারছে না বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

শ্রমিকদের সচেতন করতে পারলে পুলিশ সফল হবে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, যেকোনো দুর্ঘটনায় চালক ও সহকারী আহত হয়। তারাও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই যানবাহনের শ্রমিকদের সচেতন করা গেলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহাবুল আলম, দৈনিক পূর্বকোনের সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জোবাইদা নার্গিস, ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার হোসেনসহ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একটি শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে সচেতনধর্মী নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

আজ থেকে সপ্তাহজুড়ে নগরীর বিভিন্ন যানবাহন, চালকের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করবে সিএমপি পুলিশ।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। টানা আটদিন তারা রাস্তায় অবস্থায় নেয়।

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তার অবস্থান নেওয়ার পর থেকে ঢাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় বাস চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি আন্তজেলা বাস চলাচলও বন্ধ করে দেন মালিক ও শ্রমিকরা। তবে ঢাকা ও এর বাইরে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।