শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় স্কুলছাত্রের নাম

রাজশাহীতে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রণয়ন ও হালনাগাদে খামখেয়ালির অভিযোগ উঠেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতরের বিরুদ্ধে। সরকারি এ দফতরের প্রণীত হালনাগাদ তালিকায় মৃত ব্যক্তির নামও যেমন রয়েছে, তেমনি স্কুলছাত্রের নামও তালিকায় স্থান পেয়েছে। ফলে মাদক বিভ্রান্তি আর হয়রানিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগে বলেন, সম্প্রতি রাজশাহী জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতর জেলার মাদক ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা হালনাগাদ করে। এর মধ্যে গোদাগাড়ির হেরোইন ব্যবসায়ীদের তালিকাও হালনাগাদ হয়।এদিকে এ তালিকা অনুসরণ করে গোদাগাড়ির মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রচার হয়।

অভিযোগে আরও জানা যায়, গোদাগাড়ি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের নাম মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ দফতরের তালিকায় স্থান না পেলেও উপজেলার মহিষালবাড়ী আল ইসলাম মাধ্যমিক স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আওলাদ হোসেনের (১৩) নাম মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে।

স্কুলছাত্র আওলাদ হোসেনের বাবা মাদারপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা সেন্টু অভিযোগে বলেন, অতিসম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দফতরের লোকজন হঠাৎ করেই তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আওলাদকে খুঁজতে থাকেন। ওই সময় স্কুলছাত্র আওলাদ হোসেন স্কুলের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতরের কর্মকর্তারা দেখতে পান, আওলাদ স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার বয়স ১৩ বছর।

স্কুলছাত্র আওলাদের স্কুলের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায়ই এলাকায় দলবেঁধে টহল দেন। তাদের তালিকাতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কারো নাম নেই। স্কুলছাত্র আওলাদের পরিবারের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করতেই মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতরের লোকজন আওলাদ হোসেনকে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এলাকাবাসী জানান, স্কুলছাত্র আওলাদ হোসেনের বাবা গোলাম মোস্তফা সেন্টু একজন দরিদ্র কৃষক। খুব কষ্ট করে তাদের সংসার চলে। মাদক বা এ ধরনের কোনো অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আওলাদ হোসেনও ৫ ওয়াক্ত নামা পড়ে। স্বভাব চরিত্রে সে খুব ভালো ছেলে হিসাবে এলাকায় পরিচিত।

এই বিব্রতকর পরিস্থিতি কীভাবে হচ্ছে, জানতে চাইলে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিচালক লুৎফর রহমান বলেন, যে কোনোভাবেই হোক স্কুলছাত্র আওলাদের নামটি তালিকাতে উঠে গেছে। যাচাই-বাছাই করে তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে। স্কুলছাত্রের নাম কীভাবে বা কারা তালিকায় তুলেছে, সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।