শুধু মেয়েটির জন্যই থামে ট্রেন!

প্রায় দু’বছর আগে জাপানের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের ট্রেনের গল্প হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল বিশ্বের অনেক মানুষের। কামা শিরাতাকি নামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওই রেল স্টেশনে একটি ট্রেন দিনে দু’বার বিশেষ কারণে থামতো। আর সেই বিশেষ কারণ হচ্ছে, স্কুল পড়ুয়া এক শিশুর স্কুলে যাওয়া! শিশুটি যাতে প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারে সেজন্যই তিন বছর বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষ পরে ওই সার্ভিসটি চালু করে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াত সমস্যা প্রকট হওয়ায় ট্রেনটি না থাকলে শিশুটির পড়াশোনা হতো না। শিক্ষার গুরুত্ব এবং একটি শিশুর মুখে হাসি ফোটাতে জাপানের রেল কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করে। সেই শিশুটি ঠিকই গ্রাজুয়েশন শেষ করেছিল। তাই পরবর্তীতে ওই বিশেষ সার্ভিসটিও বন্ধ হয়ে যায়। তবে ইতিহাস সম্ভবত বারবারই ফিরে আসে।

এবারের ঘটনাটি রাশিয়ার। সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে মুরমানস্ক গামী একটি ট্রেন প্রতিদিন একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে দু’বার থামছে। পয়াকোন্ডা নামক প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিদিন ওই বিশেষ ট্রেনে দু’জন মাত্র যাত্রী নিয়মিত চলাচল করেন। একজন শিক্ষার্থী এবং তার দাদি। উদ্দেশ্যও এক, কারিনা কাজলোভা নামের ১৪ বছরের ওই শিক্ষার্থী যাতে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে।

তুষার আচ্ছন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলটিতে যারা বসবাস করে, সাধারণত তারা খুব প্রয়োজন না হলে শহরে যায় না। পথ দুর্গম হওয়াই এর মূল কারণ। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের কারিনা পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী বলেই বিশেষ ওই ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা এবং রাত ৯টায় থেমে থাকে।

অবশ্য কারিনার পড়াশোনা আগেই শেষ হওয়ায় বিশেষ ট্রেনটিকে সেই সময় অনুযায়ী ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ রাত ৯টার পরিবর্তে সন্ধ্যার দিকে ফিরতি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর পেছনে অবশ্য কারিনার মায়ের ভূমিকা রয়েছে। তিনিই আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।