শোক-শ্রদ্ধায় রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের স্মরণ

সাভারের রানা প্লাজা ধসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ছয় বছরপূর্তির দিন নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। শ্রদ্ধা জানান ভবন ধসে নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরাও। এ সময় শোকাহত অনেক স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বুধবার সকালে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদীতে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। মুহূর্তের মধ্যেই ফুলে ফুলে ভরে যায় অস্থায়ী বেদিটি।

নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে রানা প্লাজার সামনে আসেন। এরপর অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় শ্রমিকরা অবিলম্বে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার ও নিহত-আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থাসহ নানা দাবি করেন।

শ্রমিকরা ছাড়াও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শিল্প পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, উদ্ধারকর্মীসহ নিহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যরাও। শ্রদ্ধা জানানোর সময় নিহত অনেকের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য রানা প্লাজার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের সাঁজোয়া যানও আছে। পুলিশ কাউকেই বেশিক্ষণ অস্থায়ী বেদির সামনে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে পুলিশ সবাইকে দ্রুত সরিয়ে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের এই দিনে সাভার বাসস্ট্যান্ডে যুবলীগ নেতা সোহেল রানার নয়তলা বাণিজ্যিক ভবন ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ে। ঘটনার সময় ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করছিল।

বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহতম এই ভবন ধ্বসের ঘটনায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী মারা গেছেন ১ হাজার ১৪৫ জন শ্রমিক। আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ৮১ জন। বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে ২৯১টি লাশ।

ভবন ধ্বসের ছয় বছর পার হলেও অনেক নিহত শ্রমিকদের স্বজন ও আহত শ্রমিকরা পায়নি প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের সুবিধা। ফলে অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিতে না পারায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি অনেক আহত শ্রমিক। ভবন ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্তের শিকার শ্রমিকদের আজও তাদের অধিকার ও ক্ষতিপূরণের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে।