শ্রাবণের এই তীব্র দাবদাহ আর কয়দিন থাকবে?

সারা দেশে এখন দাবদাহে নাজেহাল মানুষ। শ্রাবণে এসে সূর্যের তেজে সবার জীবন এখন ওষ্ঠাগত। গত কয়েক দিনের কাঠফাটা রোদ প্রকৃতিতে অস্বস্তির মাত্রা বাড়িয়েছে।

অথচ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ছিল বৃষ্টিমুখর; মেঘের আড়াল থেকে সূর্যটাকে খুবই কম বের হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি দেখে অনেকের ভাবনায় ছিল, এবার আগেভাগেই বুঝি বর্ষা চলে এল। কিন্তু ঋতচক্রের হিসেবে ভরা বর্ষায় এসে যেন বৃষ্টি পালিয়েছে।

আবহাওয়াবীদ মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, দাবদাহ আজকেই থাকবে। আজকের পর কমে যাবে। তবে দক্ষিণে তাপমাত্রা যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে। মধ্যাঞ্চল থেকে দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা কমবে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা থাকছে। এতে গরম বেড়ে গেছে। শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা কমলেও অস্বস্তি ঘুচবে না। শনিবারের পর থেকে বৃষ্টির মাত্রা বাড়তে পারে।

আবহাওয়াবীদরা বলেন, মৌসুমি বায়ু কিছুটা দুর্বল থাকায় দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে বৃষ্টি কমে গেছে। রোববার পর্যন্ত এ ধরনের তপ্ত আবহাওয়া থাকতে পারে। এরপর বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টি শুরু হবে। ফলে গরম কমে আসবে।

তবে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও কয়েকদিনের মধ্যে অঝোরধারায় না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানিয়েছে, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডের কোথাও কোথাও এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কমেও যেতে পারে।

বর্ষাকালে টানা কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় তাপমাত্রা বেড়েছে। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ওপরের দিকে (স্থলভাগে) বৃষ্টি হচ্ছে না। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে বলে মত আবহাওয়া অধিদফতরের।

বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীর থেকে ঘাম ঝরছে এবং মানুষের অস্বস্তি লাগছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘু চাপটি সৃষ্টি হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত এই লঘুচাপ মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে একীভূত হয়েছে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং তা উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজমান রয়েছে।