শ্রীলঙ্কায় মসজিদে হামলা

শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে মুসলিমদের একটি মসজিদ ও বেশ কিছু দোকানে হামলা চালিয়েছে দেশটির উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, গত বছর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির উগ্রপন্থী বৌদ্ধ গোষ্ঠীগুলো। একই সঙ্গে বৌদ্ধদের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন নিদর্শন ধ্বংসেরও অভিযোগ আনা হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে।

শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বলেছেন, সোমবার আমপারায় একটি মসজিদ, চারটি দোকান ও বেশ কয়েকটি গাড়িতে সিংহলি বৌদ্ধদের হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে মসজিদ ও দোকানে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার মুসলিমদের বিভিন্ন সংগঠনের জোট মুসলিম কাউন্সিল অব শ্রীলঙ্কা (এমসিএসএল) মসজিদে হামলার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও ঘটনা তদন্তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

এক বিবৃতিতে এমসিএসএল বলছে, গোষ্ঠী, জাতি, ধর্মীয় বিশ্বাস নির্বিশেষে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের একমাত্র দায়িত্ব। এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ধারবাহিকভাবে বাড়ছে এবং মুসলিমদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে।

গত বছর দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে শ্রীলঙ্কার সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথিরিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বীক্রমাসিংহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন। তবে সরকারি ওই প্রতিশ্রুতির পরও দেশটির সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বন্ধ হয়নি।

২ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কায় মুসলিম রয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ৭০ ও হিন্দু ধর্মের অনুসারী আছে ১৩ শতাংশ।