ষোড়শ সংশোধনীর রায় : রিভিউ আবেদন প্রস্তুতিতে ১১ সদস্যের কমিটি

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন প্রস্তুত করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুক্রবার জানান, ওই রায়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে রিভিউ প্রস্তুতির জন্য এ কমিটি কাজ করছে। কমিটিতে সুপ্রিম কোর্টের দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও আট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রয়েছেন।

গত ১১ অক্টোবর রায়ের সার্টিফায়েড কপি (সত্যায়িত অনুলিপি) তুলেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রায় প্রদানকারী বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর গত ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণার আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৩ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ সংক্ষিপ্ত রায় দেন।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে অর্পণসংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের ১৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় গত বছর ১১ আগস্ট প্রকাশ করা হয়। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চ গত বছরের ৫ মে বিষয়টির ওপর সংক্ষিপ্ত রায় দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বেঞ্চের অপর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক। তবে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে আরেকটি রায় দিয়েছেন। উচ্চ আদালতের রুলস অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে যে রায় দেওয়া হয়, সেটাই চূড়ান্ত হবে।

এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কেন ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন হাইকোর্ট।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর আলোকে বিচারপতি অপসারণের জন্য একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করা হয়েছে। অসদাচরণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাকে অপসারণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইন’-এর খসড়া গত বছর ২৫ এপ্রিল মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিতও হয়। পরে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আইন, ২০১৪-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন।