সরকারি চাকরির দিকেই বেশি আগ্রহী অধিকাংশ তরুণ

বর্তমান তরুণদের বড় অংশই সরকারি চাকরির দিকে বেশি আগ্রহী। এর প্রকাশ দেখা গেছে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে। নতুন পে স্কেলে বেশি বেতন, চাকরির নিশ্চয়তা, ক্ষমতা-মর্যাদাসহ নানা কারণে সরকারি চাকরির প্রতি তরুণদের আগ্রহ।

সরকারি চাকরি, বিশেষ করে বিসিএস চাকরির প্রতি তরুণদের এখন অনেক বেশি আগ্রহ। এই সোনার হরিণ তারা কিছুতেই হাতছাড়া করতে রাজি নয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লেখাপড়ার চেয়ে বিসিএস প্রস্তুতিতেই সময় বেশি কাটে অনেকের।

সরকারি চাকরির প্রতি কেনো তাদের এতো আগ্রহ? শিক্ষার্থীদের অনেকের মতে, সরকারি বেতন স্কেল এর অনেক বড় একটা কারণ। সামনে আসতে যাচ্ছে নতুন আরেকটি বেতন স্কেল, যেখানে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা।

শুধু ভালো বেতন নয়। সরকারি চাকরি দেয় পেশাগত নিরাপত্তা, অবসরের পর পেনশন আর একই সঙ্গে সামাজিক মর্যাদা – এমনটাই মনে করছেন তরুণরা।

তরুণদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে সমাজতত্ত্ববিদদের কাছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নেহাল করিম বলেন, আগে বেসরকারি চাকরিতে বেতন বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার বছরখানেক আগে সরকারি চাকরিতে বেতন অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়ায় এখন বেসরকারি চাকরির চেয়ে সরকারি চাকরিতেই বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি।

এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলছেন, বেসরকারি চাকরিতে অনেক বেশি অনিশ্চয়তা ও প্রতিযোগিতা রয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্নভাবে সরকারি চাকরিকে লোভনীয় করে তুলেছে সরকার।

তবে বিষয়টিকে একটু ভিন্নভাবে দেখছেন পাবলিক সার্ভিস কমিশন, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক সচিব ড. সাদত হুসাইন। তিনি বলেন, সরকারি চাকরির পরীক্ষার মান আরও অনেক উন্নত হলে পরিস্থিতি এমন হতো না।

তারা সকলেই অবশ্য বলছেন, সরকারি চাকরিতে আগ্রহ থাকতেই পারে, তবে চ্যালেঞ্জিং প্রাইভেট সেক্টরের জন্যও নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলা দরকার তরুণদের। কারণ প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত।