সরাইল-আশুগঞ্জে ‘ধানের শীষ’ চান ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচনী মাঠ। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়তে চান ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। ভাষাসৈনিক অলি আহাদের মেয়ে রুমিন ফারহানা কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। নিজেকে তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী দাবি করা রুমিন দলের হারানো এ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চান।

রুমিনের পৈত্রিক ভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। যেটির অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ নির্বাচনী এলাকায়। এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি খালেদ হোসেন মাহবুব দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। যদিও ২০১১ সালের উপ-নির্বাচনে দলের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। দেশের টেলিভিশন চ্যানেলেগুলোর রাজনৈতিক টকশোতে খুরধার বক্তব্যের জন্য নিজ দলের বাইরেও তিনি সমাদৃত। পাশাপাশি আইনজীবী হিসেবেও তার খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। তার নির্বাচনে আসার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন নেতাকর্মীরা।

দলের হাইকমান্ডের কাছ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত পেয়েই রুমিন ভোটের মাঠে নেমেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। যদিও এ আসনে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া দলের মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। রুমিন-সাত্তার ছাড়াও আরও কয়েকজন প্রার্থী বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন এ আসনটিতে।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির চলমান আন্দোলন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যরিস্টার রুমিনের জোরালো ভূমিকাকে মূল্যায়ণ করে তাকেই দলের মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আশা করছেন কর্মী-সমর্থকরা। পাশাপাশি আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে যে খ্যাতি রয়েছে সেটিও ভোটারদের আকৃষ্ট করবে বলে দাবি তাদের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষের সাথে আমার এক নাড়ির টান আছে। তাদের সাথে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অতীতেও ছিল এখনও আছে। তরুণ প্রজন্ম মনে করে সরাইল-আশুগঞ্জে রুমিন ফারহানার কোনো বিকল্প নেই। বিগত কয়েক বছর একটা মানুষও যখন সাহস করে দলের পক্ষে কথা বলেনি তখন তখন গণমাধ্যমে আমি দলের কথা বলেছি।

তিনি বলেন, এ আসন থেকে ১৯৭৩ সালে আমার বাবা অলি আহাদ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন থেকেই এ আসনে অ্যান্টি আওয়ামী লীগ সেন্টিমেন্ট শুরু হয়। পরবর্তীতে ক্যু’র মাধ্যমে আমার বাবার নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তন করে দেয়া হয়। আমার বাবার এ কষ্টটা আমার মধ্যেও ছিল। সে জন্যই আমি সরাইল-আশুগঞ্জ থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

রুমিন আরও বলেন, আমার পক্ষে ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি। রুমিন ফারহানা তাদের কাছে একটা ক্রেজ। আইনজীবী হিসেবে আমার জনপ্রিয়তাই ভোটারদেরকে আকৃষ্ট করবে। মনোনয়নের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বলেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বাবা একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন। তিনি নিজেও সারাদেশে পরিচিত। তবে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে মনোনয়ন বোর্ড সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দেবে।