সাড়ে ৫ কোটি টাকার রাস্তায় ২০ দিনেই গর্ত

মাত্র ২০ দিনেই সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই এখন বাস্তবতা। সড়ক ও জনপদ বিভাগের সঙ্গে মিলে লুটপাটের এ মহোৎসবে মেতেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার এ হীন চেষ্টার কি কোনো বিচার হবে না? এমন প্রশ্ন কালীগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ কিলোমিটার মহাসড়ক সংস্কারের পর মাত্র ২০ দিনেই কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

খয়েরতলা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ মহাসড়কে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার গাড়ি চলে। খুলনা, মংলা, নড়াইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোরের মানুষের মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া হয়ে নাটোর, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী যাওয়ার একমাত্র পথ এটি। কিভাবে এ রাস্তা নিয়ে দুর্নীতি করা হচ্ছে দিনের পর দিন?

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পিএমপি মেজর (প্রিয়োডিক মেইনটেন্যান্স প্রজেক্টের) আওতায় ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ৪টি স্থানে ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার কাজ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯২৩ টাকা বরাদ্দে ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ কাজে পাথর-বালুর ম্যাকাডাম হবে ৮ ইঞ্চি আর কার্পেটিং হবে ৫০ মিলিমিটার।

অফিস আরো জানায়, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত চারটি স্থানে পুরোনো সড়ক ভেঙে নতুন করে করা হয়েছে। ঝিনাইদহ পৌর এলাকার আলহেরাপাড়া থেকে তেঁতুলতলা, বিষয়খালী বাজারের উত্তরে, কালীগঞ্জের খয়েরতলা ও কলাহাটা এলাকায় কাজ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মিজানুর রহমান জানান, ভারী বর্ষণের পানি পেয়ে রাস্তা নষ্ট হয়েছে। কাজে কোনো ত্রুটি ছিল না। রাস্তার নিচের শক্ত বেইজের কারণেও কিছুটা সমস্যা হয়েছে। নিজের আর্থিক ক্ষতি হলেও তিনি সব ঠিক করে দেবেন বলে জানান।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান জানান, ২৪ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু হয়ে ২৪ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা। সুতরাং কাজ এখনও চলছে। তাদের বিলও বকেয়া আছে। সড়কের কাজ সঠিকভাবে করতেই হবে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের দু`তিন দিন আগে ঠিকাদার কাজ শেষ করে কাজের স্থান ত্যাগ করেন।