সিটি নির্বাচনে এমপিরা প্রচারের সুযোগ পেতে পারেন

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর সংসদ সদস্যরা যাতে ওই সিটির নিজের এলাকায় যাওয়ার সুযোগ পান সে জন্য আচরণবিধি সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর জন্য ইসির আইন সংস্কার কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিদ্যমান নির্বাচন আচরণবিধির কারণে সংসদ সদস্যরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারেন না। আইনে বলা আছে, শুধু ভোটের দিন ভোট দিতে পারবেন। অন্য সময় যেতে পারবেন না। ফলে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর‌্যন্ত নিজের এলাকার বাইরে থাকতে হয় এমপিদের।

‘সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬’ সংশোধন নিয়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে ‘কমিশন সভা ’ হয়েছে। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, অতি সুবিধাভোগী, অতি গুরুত্বপূর্ণ কারা সে বিষয়টি সভায় আলোচনা হয়েছে। সিটি একটা বড় এলাকা। মাননীয় সংসদ সদস্যরা সিটি এলাকায় বসবাস করেন। যাওয়া-আসা করেন। স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের তফসিল হলে তাদের যাওয়া-আসা অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। সেদিক বিবেচনা করে আলোচনাটা হয়েছে।

সংসদ সদস্যরা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আওতায় আছেন জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘এটা ইউপি ও পৌরসভায় প্রযোজ্য হলেও সিটি করপোরেশন বিরাট এলাকা, সেখানে নির্বাচনের সময় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে তাদের বাইরে থাকতে হয়। সেটা বিবেচনা করেই সংবিধানের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে আলোচনাটা হয়েছে।’

ইসি সচিব বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা কোনো অফিস হোল্ড করেন না। কোনো সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না। তারা কোনো অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কি না বা সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কি না—এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে পর‌্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বে আইন ও বিধিমালা সংস্কারের যে কমিটি রয়েছে তারা এটি পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দেবেন। এরপরে বিষয়টি কমিশনে উত্থাপন করা হবে বলে আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।

ইসি সচিব বলেন, এমপিদের এলাকায় যাওয়ার বিষয়ে যেহেতু আচরণবিধি সংশোধনের বিষয় আছে, কী কী সংশোধন আসতে পারে কমিটি একটি প্রস্তাব দেবে। কমিটিকে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, তবে যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তফসিল ঘোষণার পর এই উদ্যোগ কেন? সচিব বলেন, আচরণবিধি মাঝেমধ্যে আপডেট করা লাগে। আগে দলীয় প্রতীকে হতো না, এখন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে। তখন ছিল এক ধরনের প্রেক্ষাপট, এখন আরেক ধরনের। স্বাভাবিকভাবে এমপিরা এলাকায় যেতে পারেন না। এটা আপডেট করার জন্য আলোচনা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দলের চাপে এই উদ্যোগ কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, চাপে না। যেকোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের স্টেক হোল্ডার। তাদের নিয়ে কাজ করতে হয়। তাদের নিয়ে পরামর্শ করে আলাপ-আলোচনা করে তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো আমরা বিবেচনা করি।’