সিনহাকে ঘিরে কোর্টে আওয়ামী-বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোল

ছুটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অস্ট্রেলিয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে পাল্টা-পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী নেতারা। এ সময় দু’পক্ষের আইনজীবীরা হট্টগোল করেছেন। শনিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।অডিটোরিয়ামে প্রথমে সংবাদ সম্মেলন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনেরর নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা।

এর সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করতে অডিটোরিয়ামে সমিতির সহ-সভাপতি অজি উল্লাহের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা আসেন।

কিন্তু, আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীদের আসতে দেখে বিএনপি সমর্থিতরা অডিটোরিয়াম দখল করে রাখেন। এ সময় দু’দলের আইনজীবীদের মধ্যে বেশ উচ্চবাচ্য হয়।

এক পর্যায়ে আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীদের অডিটোরিয়াম ছাড়তে বাধ্য করে বিএনপিপন্থীরা। পরে তারা অডিটোরিয়ামের বাইরে এসে সংবাদ সম্মেলন করে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (এসকিউ ৪৪৭) অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সঙ্গে স্ত্রী সুষমা সিনহার যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি যাননি।

গত ১ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটির কথা জানিয়ে চিঠি দেন। পরে তার ছুটি আরও নয় দিন বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

এই ছুটি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ক্যান্সারে আক্রান্ত, নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এজন্য তিনি এক মাসের ছুটি চেয়েছেন।’

ওই সময় প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদন সাংবাদিকদের দেখান আইনমন্ত্রী। এতে লেখা ছিল, ‘আমি ইতোপূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলাম। বর্তমানে আমি শারীরিক জটিলতায় ভুগছি।’

তবে দেশ ছাড়ার আগে হেয়ার রোডের বাসভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু, ইদানিং একটা রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী, বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।’

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটি মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশন করায় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন। এই অভিমান অচিরেই দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায়ে সরকার, সংসদ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, সামরিক শাসন এবং রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে অনেক পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে।