সিরিয়ায় পশ্চিমাদের পরবর্তী কৌশল কী?

সিরিয়া প্রশাসন নিজ জনগণের ওপর রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটির রাসায়নিক অস্ত্রের স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। তবে এই হামলার পরও বহু কিছু নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। বিশেষ করে এর পরও যদি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ প্রশাসন একই কাজ করে সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী হবে? মার্কিন প্রশাসন থেকে হামলার আগে-পরে বারবারই জানানো হয়েছে, সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা তুলে নেওয়া হবে। বাস্তবতার নিরীখে সেই পরিকল্পনারই গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?

পূর্ব গৌতার দৌমায় হামলা হয় গত ৭ এপ্রিল। ওই হামলায় নিহত হয় অন্তত ৪৫ জন। পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল আসাদ সরকার। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার আগেই সিরিয়ার রাসায়নিক স্থাপনায় হামলা চালায় ওয়াশিংটন, প্যারিস ও লন্ডন। এর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের ফিরিয়ে আনা হবে। হামলার পরও হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স জানান, তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো হেরফের হয়নি। প্রসঙ্গত, বর্তমানে সিরিয়ায় দুই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে।

যদিও সিরিয়া সরকার যদি একই ঘটনা আবার ঘটায় সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন কী করবে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এরই মধ্যে বহুবার রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে আসাদ প্রশাসন। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালের মতে এ সংখ্যা অন্তত ৫০ বার। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়েছে মাত্র দুইবার। নিরাপত্তা পরিষদে গত শুক্রবার হ্যালে বলেন, ‘আসাদ সরকার বহুবার রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করেছে। আমরা মনে করি, আসাদ সরকারকে এর থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে কূটনৈতিকভাবে যা কিছু সম্ভব করা হয়েছে। কাজ হয়নি। কাজেই এবার ব্যবস্থা নিতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেমস ক্যারাফানো বলেন, সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি জটিল বা দীর্ঘায়িত করার কিছু নেই। তিনি মনে করেন, সিরিয়ায় মূল লক্ষ্য সরকার এরই মধ্যে অর্জন করেছে, যা ছিল জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের পরাজয়। সিরিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড বানানোর লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে যায়নি। ‘আমাদের সিরিয়া সংকটের সামাধান করতে হবে না। আসাদ সরকারের পতন আমাদের লক্ষ্য নয়। সিরিয়াকে দুধ-মধু নিয়ে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েও আমরা সেখানে যাইনি। সাদাসিধাভাবে বলতে গেলে সিরিয়ায় আমাদের লক্ষ্য, একটা সহনীয় পর্যায়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা। একই সঙ্গে ইরান, আইএস বা আল-কায়েদা যেন ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে না পারে তা নিশ্চিত করা।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের স্বার্থ সুরক্ষাই আমাদের সাফল্য।’ সূত্র : সিএনএন।