সীমান্ত ছাড়তে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের হুমকি

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সরে যেতে দু’দিন ধরে মাইকিং করে হুমকি দিচ্ছে মিয়ানমার। তুমব্রু সীমান্তের ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডকে’ মংডু রাজ্যের অংশ দাবি করে দেশটি এই হুমকি দিচ্ছে। মংডু রাজ্যে জরুরি আইন জারি আছে জানিয়ে রোহিঙ্গাদের ওই স্থান থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। মাইকিং করার সময় রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ বলেও আখ্যা দেয়া হয়।

এনিয়ে গত দু’দিন ধরে ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়া সাড়ে ছয় হাজারেরর বেশি রোহিঙ্গার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা বড় ধরনের গণহত্যার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়া নুর আলম নামের এক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনারা তুমব্রু সীমান্তের পাশে পাহাড়ের চূড়ায় মাইক লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মাইকিং করে তাদের সরে যেতে বলছে। রোহিঙ্গা ভাষা ও মিয়ানমারের ভাষায় মাইকিং করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মাইকিং করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে- ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডের’ এই জায়গা মিয়ানমারের মংডু রাজ্যের অংশ। মিয়ানমার সরকার মংডু রাজ্যে জরুরি আইন জারি করেছে।

নুর আলম বলেন, মাইকিং করে মিয়ানমারের আইন মেনে তাদের সবাইকে দ্রুত সরে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় ‘আইনগত ব্যবস্থা’ নেয়ার হুমকি দিচ্ছে দেশটি।

আবদুস সালাম নামের আরেক রোহিঙ্গা জানান, গত দু’দিন ধরে জিরো পয়েন্টের খুব কাছে মিয়ানমারে অভ্যন্তরে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমার সরকারের মাইকিং আর গুলির আওয়াজে তারা সবাই এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমন চৌধুরী বলেন, ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডের’ রোহিঙ্গাদের সরে যেতে মিয়ানমারের মাইকিং করার বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন। বিষয়টি তিনি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ মিলিশিয়ারা গণহত্যা শুরু করলে নতুন করে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ পালিয়ে আসে। সীমান্ত পার হতে না পেরে সাড়ে ছয় হাজার রোহিঙ্গা তুমব্রু ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারত ও চীনসহ সাত দেশের রাষ্ট্রদূত তুমব্রু সীমান্তে এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ওই সময় রাষ্ট্রদূতরা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে মতামত জানতে চান। তারা মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহ্বান জানান।