সেই ‘পুলিশের ভিক্ষুক মায়ে’র দায়িত্ব নিতে চান এসআই বশির

প্রতিষ্ঠিত ছয় সন্তানের জননী সত্তরোর্ধ্ব মনোয়ারা বেগম পেশায় ভিক্ষুক। এ বয়সে যার আরাম-আয়েশে দিন কাটানোর কথা সেখানে দু’বেলা খাবার জোটাতে ভিক্ষা করতে হয় তাকে। একদিন ভিক্ষা না করলে খাবার জোটে না এ হতভাগী পুলিশের মায়ের।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী সরদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। এ বৃদ্ধার রয়েছে প্রতিষ্ঠিত ৬ সন্তান। তার মধ্যে তিন ছেলে পুলিশ বাহিনীতে। তারা হলেন বড় ছেলে ফারুক হোসেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), মেজ ছেলে মো. জসিম উদ্দিন পুলিশ সদস্য ও ছোট ছেলে নেছার উদ্দিনও পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)।

অন্য দুই ছেলে শাহাবউদ্দিন ব্যবসা এবং গিয়াস উদ্দিন ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। মনোয়ারা বেগমের একমাত্র মেয়ে মরিয়ম সুলতানা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। কিন্তু এ গর্ভধারিণী মাকে আজ দু’বেলা খাবারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। বয়সের ভার আর অসুস্থ্যতার কারণে ভিক্ষা করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে মনোয়ারা বেগমের।

গণমাধ্যমে এ খবর জানতে পেরে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) কর্মরত এসআই বশির আহামদ। প্রতিষ্ঠিত গুণধর ছয় সন্তানের জননীর খোঁজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন এ বৃদ্ধা মায়ের দ্বায়িত্বভার নেওয়ার কথাও।

পুলিশ অফিসার বশির আহামদের ফেইসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তোলে ধরা হল-

১৮ সেপ্টেম্বর (আজ দুপুর হতে মনটা ভাল নেই, দুপুরের আমাদের সময় পত্রিকায় দেখলাম দুই পুলিশ অফিসারের বৃদ্ধা মা ভিক্ষার থলি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নাই, উনারা কি..! মা কি সম্পদ বুঝে না? আমার মা বাবা গত কয়েক দিন হয় আমার বড় ভাইয়ের নিকট (আমেরিকায়) অনেক দুর চলে গেছেন। মা বাবা কাছে নাই তাই আমার মনে হয় আমি রাস্তার ফকির হয়ে গেলাম, আমি ঐ বৃদ্ধা মায়ের সকল দায়িত্ব নিতে চায়, আমার প্রকৃত বন্ধুগণ ঐ বৃদ্ধা মায়ের সঠিক সন্ধানের জন্য তাহার নিকটতম কারো মোবাইল নান্বার সংগ্রহ করে দিন, গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি অনুরোধ ঐ মায়ের সুস্পট ঠিকানা পোষ্ট করার জন্য, তাই হৃদয় ভরা বিষন্নতা নিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার লাবনী বীচে সীমানাহীন আকাশ ও সাগরের দিক তাকিয়ে আছি)।