সেই ফুটফুটে শিশুটির ঠিকানা হলো ছোটমনি নিবাসে

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের শিশু হাসপাতালের টয়লেট থেকে উদ্ধার ফুটফুটে নবজাতকের ঠিকানা হলো আজিমপুরের ছোটমনি নিবাসে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ছোটমনি নিবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তাকে তুলে দেয়া হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে শিশুটিকে আজিমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

ওই নবজাতকটির নাম রাখা হয়েছে গহিন।

এদিকে শিশুটি উদ্ধারের পর থেকে তাকে দত্তক নিতে শেরেবাংলা নগর থানায় শত শত ফোন এসেছে।

এ ছাড়া ওই কন্যাশিশুটিকে দেখতে ও দত্তক নিতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন শতাধিক মানুষ।

আর এ জন্য শিশুটির নিরাপত্তায় শিশু হাসপাতালের ওই কেবিনের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

এদিকে শিশুটির সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই তার দেখাশোনা করছিলেন শিশু হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল মাহমুদ ও তার স্ত্রী পলি বেগম। ১০ বছর আগে এই দম্পতির বিয়ে হলেও তারা নিঃসন্তান।

তারাই এই শিশুটিকে দত্তক নিতে চান বলে জানিয়েছেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি এভাবে হাসপাতাল থেকে কোনো শিশুকে হস্তান্তরের নিয়ম নেই বলে তাকে শিশুমনি নিবাসে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো শিশুকে পাওয়া গেলে তাদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলার পর আজিমপুরের শিশু নিবাসে স্থানান্তরিত করা হয়।

সেখান থেকে শিশুদের দত্তক নিতে আগ্রহী দম্পতিরা পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। কোনো শিশুকে দত্তক নিতে একাধিক আবেদন জমা পড়লে আদালত তাদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দম্পতি নির্বাচন করেন।

শিশু ‘গহিনে’র ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শিশুমনি নিবাস কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের সময় শিশুটিকে কোলছাড়া করতে রাজি হননি পলি বেগম। তাই বাধ্য হয়েই তাকেসহ শিশুটিকে শিশুমনি নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।

শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, শিশুটির সন্ধান পাওয়ার পর আমরা জিডি করেছি। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পর নিয়মানুযায়ী তাকে সমাজসেবা অধিদফতরের শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে।

রাসেল মাহমুদ ও পলি বেগম দম্পতির বিষয়ে পরিচালক বলেন, তাদের বিষয়টি মানবিক। তারা শিশুটিকে তিন দিন ধরে দেখাশোনা করছেন।

কিন্তু আমরাও তো আইনের কাছে বাধা। এখন নিয়মানুযায়ী তারা পারিবারিক আদালতে আবেদন করার পর আদালত তাদের উপযুক্ত মনে করলে তারা শিশুটির দায়িত্ব পেতে পারেন।

প্রসঙ্গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে গাইনি বিভাগের ডা. আফরোজা গনি আইসিইউর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নবজাতকটিকে দেখতে পান। পরে তিনি আয়ার মাধ্যমে শিশু ওয়ার্ডে পাঠানোর পর বাচ্চাটিকে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন।